Skip to main content

অপেক্ষা

       অপেক্ষা
বেশ ছিলাম নিজের মতো। চাকরি আসা যাওয়া বসের ঝাড় খাওয়া আর বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দিয়ে একটু এনার্জি সংগ্ৰহ করে আবার পরের দিনের কাজের মধ‍্যে ঝাঁপিয়ে পড়া। মাস মাইনের প্রথম দশ বারো দিন একদম রাজার মতো চলা। সকাল বিকেল সেই গানটা গুনগুন করতো - মেজাজটাতো আসল রাজা....। কিন্তু কাল হলো সেই শান্তিনিকেতনে এক বসন্তোৎস্তবে উপস্থিত হয়ে দোল খেলা দেখতে যাওয়া। সুবিমল ও তমসার জেদাজেদিতে যেতে হয়েছিল তারপর হঠাৎই সেখানে বসন্তোৎসবে মেতে ওঠা, নন্দিনীর আড় চোখে দেখা আর আমার মনের মধ্যে প্রথম প্রেমের শিহরণ জাগিয়ে হাজার কল্পনার জাল বোনা। তারপর অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাওয়া সেই প্রথম প্রেমের কাহিনী অনেক দিন মনের মধ্যে আলোড়ন ফেলে থাকলেও আস্তে আস্তে তার আবেশটা কেটে গেছে। প্রথম প্রেমের রোমাঞ্চ আজ আর নেই। সুবিমলদের সঙ্গে অনেক দিন‌ই নানা বিষয়ে গল্পগুজব হলেও এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।
       শ‍্যামলী আমার পিসতুতো বোন,  অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ নেই। হঠাৎই ফোন , ' কিরে দীপাঞ্জনদা কেমন আছিস আজকাল তো আসিস‌ই না'!
সত্যি আগে যাতায়াত ছিল , অনেক দিন যাওয়া হয়নি,                             '       'হ‍্যাঁরে ঠিক বলেছিস তা তুইওতো ফোন করিসনা। আজ কি মনে করে!'
        'আগামী ৩ তারিখ আমার মেয়ের অন্নপ্রাশণ, তোকেই ভাত খাওয়াতে হবে। মনে রাখিস ভুলে যাসনে কিন্তু।'                           'এতো খুব ভালো কথা, তোর মেয়ে তার আবার অন্নপ্রাশণের সময় হয়ে গেল।'
' তুই কি আমাকে আগের মতো ভাবছিস।'
'থাকলেই ভালো হতো। যাকগে ক‍্যালেন্ডারে লাল দাগ দিয়ে রাখলাম। সকাল থেকেই হাজির হবো।'
' ঠিক আছে, আজ রাখছি'।
          সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য ছোট বাচ্চার জন্য কিছু কিনতে হবে। একটা বড়ো শপিং মলে গিয়ে এ দোকান সে দোকান করছি কিন্তু কিছুই ফাইনাল করতে পারছিনা। একা একা এই সব শপিং মলে কোন কিছু কেনা যে কি কঠিন কাজ সেটা বেশ টের পাচ্ছি। বাচ্চাটাকে কি কিনে দেবো সেটাই ঠিক করতে কালঘাম ছুটছে এরপর আবার শ‍্যামলীর জন্য একটা শাড়ি কেনার ইচ্ছে আছে। সাতপাঁচ ভাবছি, হঠাৎ পিঠের ওপর একটা মহিলার হাতের ধাক্কা খেয়ে ঘাড় ঘুড়িয়ে স্তম্ভিত হয়ে কি বলবো ভাবছি তখনই সেই তন্বী নিজেই বলে উঠলো 'কি চমকে উঠলেনতো।'
আরও কয়েক মুহূর্ত অবাক চোখ তাকিয়ে থাকার পর বললাম, ' তা একটু চমকে উঠেছি বৈকি।'
              'চিনতে পেরেছেন, কোথায় দেখেছেন! কি নাম বলুনতো!'
এবার আর সময় না নিয়েই বলি 'নন্দিনী।'
             ' ভাগ‍্যিস, কি সৌভাগ্য আমার। তা বৌয়ের জন্যে শপিং হচ্ছে। কি নেবেন, শাড়ি।'
            ' না মানে আসল উদ্দেশ্য হলো বাচ্চা মেয়ে এই এক বছরের মধ্যে, তার জন্য কিছু নেওয়া' , কথাটা শেষ করার আগেই একরাশ কল্পনা করে নিয়ে বলে উঠলো 'তাই,  তাদিকে দেখছিনা কেন, নাকি সারপ্রাইজ?'
কিভাবে যে জবাব দেব ভাবতে ভাবতেই আবার প্রশ্ন,
          'কি এত ভাবছেন মশাই!'
          'না ভাববো আবার কি, আপনার মেয়েকে আনেননি!'
একটু চুপ থেকে কথাটা এড়িয়ে গেল, 'চলুন আপনি কি কিনছিলেন, আমি হেল্প করে দিচ্ছি।'
যাইহোক নন্দিনীর সাহায্য নিয়ে অনেক্ষণ সময় নিয়ে কেনাকাটা হলো, 'থ‍্যাঙ্কস নন্দিনী আপনি না থাকলে কি বিপদেই না পরেছিলাম।'
          'তাহলে আমার‌ও কিছু পাওনা হয়, চলুন চা খাওয়া যাক।'
         'ও সিওর, মোস্ট ওয়েলকাম নন্দিনী ম‍্যাডাম।'
         'উঁ হু হু শুধু নন্দিনী।'
         'বেশ তাই, চলুন।'
এরপর ফিসফ্রাই কেটে কামড় দিতে দিতে জিঞ্জেস করলাম   'আপনার মেয়ে আর হাজবেন্ডের কথা বললেননা তো!'
         'এখনই!'
         'আপত্তি থাকলে থাক।'
         ' না না আপত্তির কিছু নেই, তার আগে আপনার খবর বলুন, কেমন সংসার করছেন।'
         ' সংসার!! যা ভাবছেন তার কোনটাই নয়। সেরকম আর হলো ক‍ই! আর শপিং, ওটা শ‍্যামলী আমার পিসতুতো বোন ও তার মেয়ে...।'
তারপর সবটাই বলার পর দেখলাম চোখ মুখ বেশ চকচক করে আনন্দের ভাব প্রকট হয়ে উঠলো। সামনের চুলগুলোতে মুখের কিছুটা আড়াল হয়ে যাচ্ছিলো সেটা ঠিক করে বুকের কাপড়টা একটু সামলে নিয়ে আরও লাজুক ভাবে নিজের ঠোঁটটা কামড়ে ধরলো।
           'দেখুন আপনাকে নিয়ে কি ভাবছিলাম' ,তারপর নিজের গল্প শুরু করলো।
           ' মেয়ে আজ আমার কাছে নেই, ওর বাবার কাছে গিয়েছে।'
          'মানে?'
          'সব মানে কি আর বোঝা যায় দীপাঞ্জন বাবু!'
          'আবার ঐ বাবুটা কেন যোগ হলো, শুধু দীপাঞ্জন। তবে আসল ব‍্যাপারটা পরিষ্কার করুন।'
          'আমরা দুজনে আর এক সঙ্গে থাকিনা। আমারই এক বন্ধু বিদিশার সাথে লিভ টুগেদারে আছে। ডিভোর্স টা ফাইনাল হয়ে গেলে হয়তো বিয়ে করবে।'
খুব অল্প কথায় নিজের জীবনের বর্তমান ঘটনার কথা বলে কেমন যেন আনমনা হয়ে গেল। এই পরিস্থিতির পর আমার কি বলা উচিৎ বুঝতে না পেরে আমিও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম। এরপর নীরবতা ভঙ্গ করে বললাম , 'সরি আমার জিঞ্জেস করা উচিৎ হয়নি।'
           'না না একি, আপনার কি দোষ। রোজ রোজ লুকোচুরি থেকে এই বেশ ভালো কি বলেন! কাউকে তো মনের কথা বলতে হবে। আজ খুব হাল্কা মনে হচ্ছে নিজেকে।'
এই বলে টেবিলের ওপরে রাখা আমার হাতটা হঠাৎই চেপে ধরে বলে ওঠে 'আপনাকে ভরসা করতে পারিতো, আমার বন্ধু হবেনতো!' বলতে বলতে  চোখদুটো ছলছল করে উঠলো।
           'এত ভেঙ্গে পরছেন কেন। সব ঠিক হয়ে যাবে।'
           ' কি জানি। চলুন আজ যাওয়া যাক, অনেক দেরী হয়ে গেল।'
           ' আপনার নাম্বারটা বলুন, পরে খোঁজ নেব।'
দুজনেই নম্বর দেওয়া নেওয়া করে এদিনের মতো বাড়ি ফিরলাম।
        প্রথমেই যে কথাটা দিয়ে শুরু করেছিলাম, 'বেশ ছিলাম...', এখন সেই বেশ থাকাটা একটু অন‍্যরকম হয়ে গেছে। অনেক ভাবনা মন উশখুশ করা, কখন‌ও আবার যদি দেখা হয়, কি কথা হবে এই সব সাতপাঁচ চিন্তা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। সাহস করে একদিন সকালে ফোন করলাম, ' হ‍্যালো নন্দিনী, দীপাঞ্জন বলছি, বিরক্ত করলাম এত সকালে!'
         ' সুপ্রভাত, এই ফোনের অপেক্ষাতেই তো এতদিন ছিলাম। ভুলে যাননি তাহলে।'
         'ভুলিনি, ভুলতে চেষ্টাও করিনি।'
         'তাই! আজ বিকেলে দেখা করা যাবে!'
         'সেই জন্যই তো ফোন করলাম, বিকেল ছটায় সাউথ সিটিতে চলে এসো, সরি আসুন।'
         'ঠিক আছে ফোন রাখি। একটা কথা ঐ এসো টাই ঠিক।'
এই বলেই ফোনটা কেটে দিলো।
আস্তে আস্তে আমাদের মেলা মেশাটা বাড়তে থাকলো। আরও অন্তরঙ্গ হলাম। শনি রবিবার গুলো যেভাবেই হোক দুজনের দেখা না হলে মনটা খালি খালি লাগছিল, ছটপট করতো। কোনদিন সিনেমা, কোনদিন শপিং মল, কোনদিন পার্কে আমাদের সময়টা নানারকম গল্পগুজব করে নিত‍্যনতুন ভাবে দিনগুলো কাটছিল। অফিসের কাজে মন বসাতে পারছিনা। ব‍্যাপারটা অন্য কালিগদের‌ও নজরে পরেছে। এ নিয়ে অনেক ঠাট্টা ইয়ার্কিও করছে। সেগুলো আমিও উপভোগ করছি। 'এমনি করেই যায় যদি দিন যাকনা..…।'
         হঠাৎই নন্দিনীর দিক থেকে আগ্ৰহ যেন‌ একটু কম মনে হলো। মাঝে মাঝেই কাজ আছে বলে আমাদের দেখা সা‍ক্ষাৎ একটু কমে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। হয়তো সত্যিই নিজের কোন কারণ হবে, কিন্তু আমার তো 'সহেনা যাতনা....'।
দুটো সপ্তাহ দেখা হয়নি, যেন দু মাস বা আরও অনেক অনেক দিন মনে হচ্ছে। ফোন করলাম, ' কি খবর নন্দিনী,  এতো ব‍্যস্ত হয়ে গেছো সময়‌ই পাচ্ছনা । আজ বিকেলে একাডেমিতে এসো। সারপ্রাইজ আছে।' তারপর ফোনটা আমিই কেটে দিলাম।
      একগোছা লাল গোলাপ নিয়ে গেছি। শুনেছি লাল গোলাপ দিয়েই নাকি প্রপোজ করতে হয়। একটু দেরী হলেও নন্দিনী এলো। ঘন নীল রঙের একটা বিষ্ণুপুর সিল্ক শাড়ি তার উপর রবিঠাকুরের নানা কবিতার কয়েকটা অগোছালো লাইনের মানস্কৃপ্ট আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। নন্দিনীর কনকচাঁপা রঙ্গে আর ছিপছিপে শরীরে একদম আঁকড়ে ধরে আছে। আজ কি নতুন ভাবে দেখছি!
একটা বেঞ্চিতে যেখানে আমরা প্রায়ই বসি সেটায় এসে বসলো, পাশে আমি।
         একথা সেকথার মাঝে আমিই বললাম আজ তোমায় খুব সুন্দর দেখাচ্ছ, একটু অন‍্যরকম। এরপর সাধারণত মেয়েদের চোখেমুখে একটু লাজুক ভাব প্রকট হয়ে ওঠে। কিন্তু কোন পরিবর্তন না দেখে একটু অবাক হয়ে জানতে চাই 'কি ব‍্যাপার কিছু খবর আছে নাকি!'
কথাটা লুফে নিয়ে বললো, 'কি করে বুঝলে? আজ একটা খবর দেব তোমায়। জানো আমাদের ডিভোর্সটা আল্টিমেটলি হচ্ছে না। বিজন, আমার বর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। আসলে বিদিশাকে তো আমি চিনি, ওর স্বভাবটাই ওরকম। বেশিদিন কোনো কিছুতেই  সুখী থাকতে পারেনা। আজ দিন দশেক হলো আমরা একসাথেই আছি। আর বিদিশার ব‍্যাপারটা ওর একদম চুকেবুকে গেছে। বিজন আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে।'
          একনাগাড়ে এতগুলা কথা শুনে স্থবিরের মতো হয়ে গেলাম। কি উত্তর দেব, কানের কাছে যেন ঝনঝন আওয়াজ হচ্ছে আর একাধিক মানুষের অট্টহাসি শোনা যাচ্ছে। এরপর কিছু একটা বলে উঠে দাঁড়িয়ে নন্দিনী যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিন্তু আমার কানে কোনটাই পৌঁচচ্ছেনা।
          অনেক প্রেম অব‍্যক্তই থেকে যায়, অনেক ব‍্যাথা পুনরুদ্ধার করা যায়না। লাল গোলাপের গোছা হাতেই থেকে গেল। অপেক্ষা করতেই থাকলাম। দেওয়ার সময়, সুযোগ কোনটাই হলনা। নন্দিনী হঠাৎ কখন চলে গেল বুঝতেও পারিনি।

          
       
         

Comments

Popular posts from this blog

বাঁকুড়ার টেরাকোটা

                                                                বাঁকুড়ার টেরাকোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের শিল্পকর্মের এক বিশেষ স্থান   অধিকার করে আছে।  বাঁকুড়ার  পোড়ামাটির  ঘোড়া ও হাতি নির্মাণের  প্রধান শিল্প  কেন্দ্র গুলি   হল পাঁচমুড়া,  রাজাগ্রাম, সোনামুখী ও হামিরপুর।  প্রত্যেক শিল্পকেন্দ্রের নিজস্ব স্থানীয় ধাঁচ ও  শৈলী রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচমুড়ার  ঘোড়াগুলিকে চারটি ধাঁচের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম  বলে মনে করা হয়। বাঁকুড়ার ঘোড়া এক  ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। ঘোড়া ছাড়াও বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী উট , হাতি , গনেশ ,  নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত মূর্তি তৈরী করে  টেরাকোটা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।  রাঢ় অঞ্চলে স্থানীয় লৌকিক দেবতা ধর্মঠাকুরের পূজায় টেরাকোটা ও কাঠের ঘোড়া ব্যবহৃত হয়। অনেক গ্রামে বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে গ্রামবাসীরা ঘোড়া মানত করে থাকেন। ভারতের বহু গ্রামে পবিত্র অশ্বথ্থ গাছের তলায় পোড়ামাটির পশুর মূর্তি সাজানো থাকতে দেখা যায়। এগুলি গ্রামবাসীদের মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার প্রতীকস্বরূপ।  এগুলি মূলত গ্রাম্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য  নির্মিত হলেও, আজকাল সমগ্র বিশ

আমার ছড়া

      ।। সধবার একাদশী ।।                                    কাবলিওয়ালার ব‌উ দেখিনি পাঞ্জাবীদের টাক দেখিনি বোরখা পরে তোলা সেলফি দেখিনি নাঙ্গা বাবার  কাপড়জামা দেখিনি। গুজরাটেতে মদ চলেনা অরুনাচলে মদের নিষেধ চলেনা নৈনীতালে ফ‍্যান চলেনা লে লাদাকে রেল চলেনা। আইসক্রীমে বরফ নেই শ‍্যাওড়া গাছে পেত্নী নেই কৃষ্ণনগরে কৃষ্ণ নেই আজ লাইফ আছে জীবন নেই।                      ।। রসগোল্লা ।।                             পান্তোয়া সন্দেশ যতকিছু আনোনা বাংলার রসগোল্লা তার নেই তুলনা। নানাভাবে তোলপাড় কতকিছু ঝামেলা নবীনের নব আবিষ্কার নাম রসগোল্লা। আসল ছানার গোল্লা সেতো হাবুডুবু রসে  একটা দুটোয় কার‌ও মন থাকেনা বশে। তাই নিয়ে খুশী ছিলো বাঙ্গালী ও বাংলা সহসা কে ভাগ নিল, কিযে হবে সামলা। উৎকল বাসী কয় বাংলার কেন তব কহ'রে আমরাই দিয়ে থাকি জগন্নাথ আহারে। দল বেঁধে এগিয়েছে বাংলার ময়রা রসগোল্লার দাবী থেকে সরছিনা ভাইরা। রেষারেষি বেড়ে গিয়ে কার‌ও নেই স্বস্তি তরজাটা চলে গেল হাইকোর্ট অবধি। অবশেষে জি আই ট‍্যাগ হ'লো বাংলার‌ই জন্য জানিনাকো র‌ইলো কি স্বাদটা, নাকি হবে অন‍্য।                 ।। ল

অপরাজিতা

অপরাজিতা বহু বৈচিত্রে ভরা অপরাজিতা।  দেবী দূর্গার বিভিন্ন রুপের মধ‍্যে আরও একটি রুপ হল  অপরাজিতা। অপরাজিতা কথার অর্থ অপরাজেয় অর্থাৎ যাকে কেউ পরাজিত করতে পারেনা।   মহর্ষি বেদব‍্যাসের বর্ণনা অনুযায়ী অপরাজিতা দেবীকে আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ শক্তিদায়িনী রুপে মান‍্যতা দেওয়া হয়েছে। ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য দেবতারা নিয়মিত আরাধনা করেন। বিজয়া দশমী বা দশেহরার সময় শক্তির রুপীনির আর এক প্রতীক হিসেবে কল্পনা করে পুজো করা হয়ে থাকে যাতে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে যেন জয়ী হ‌ওয়া যায়। অপরাজিতা পুজোর পর সেই লতা হাতে ধারণ করার রীতি অনেক স্থানেই চালু আছে। মানুষের বিশ্বাস এই অপরিজিতা রুপে দেবী দূর্গা সমস্ত অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে ধর্মের পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করে। দেবী পূরাণে ও শ্রী শ্রী চন্ডীতে এরকম কাহিনী বর্ণীত হয়েছে।             ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে এই ফুলের আবিষ্কার যার ব‍্যাপ্তি সুদূর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা পর্যন্ত। ভারতের মোটামুটি সব স্থান ছাড়াও বিদেশে যেমন ইজিপ্ট, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, ইরাক, আরব, আবগানিস্তানে এই ফুলের গাছ পাওয়া যায়। গ্ৰীষ্ম কাল ছাড়া