Skip to main content

আমার ছড়া

      ।।সধবার একাদশী ।।
                                  
কাবলিওয়ালার ব‌উ দেখিনি
পাঞ্জাবীদের টাক দেখিনি
বোরখা পরে তোলা সেলফি দেখিনি
নাঙ্গা বাবার  কাপড়জামা দেখিনি।

গুজরাটেতে মদ চলেনা
অরুনাচলে মদের নিষেধ চলেনা
নৈনীতালে ফ‍্যান চলেনা
লে লাদাকে রেল চলেনা।

আইসক্রীমে বরফ নেই
শ‍্যাওড়া গাছে পেত্নী নেই
কৃষ্ণনগরে কৃষ্ণ নেই
আজ লাইফ আছে জীবন নেই।

                     ।।রসগোল্লা।।
                           
পান্তোয়া সন্দেশ যতকিছু আনোনা
বাংলার রসগোল্লা তার নেই তুলনা।
নানাভাবে তোলপাড় কতকিছু ঝামেলা
নবীনের নব আবিষ্কার নাম রসগোল্লা।

আসল ছানার গোল্লা সেতো হাবুডুবু রসে 
একটা দুটোয় কার‌ও মন থাকেনা বশে।
তাই নিয়ে খুশী ছিলো বাঙ্গালী ও বাংলা
সহসা কে ভাগ নিল, কিযে হবে সামলা।

উৎকল বাসী কয় বাংলার কেন তব কহ'রে
আমরাই দিয়ে থাকি জগন্নাথ আহারে।
দল বেঁধে এগিয়েছে বাংলার ময়রা
রসগোল্লার দাবী থেকে সরছিনা ভাইরা।

রেষারেষি বেড়ে গিয়ে কার‌ও নেই স্বস্তি
তরজাটা চলে গেল হাইকোর্ট অবধি।
অবশেষে জি আই ট‍্যাগ হ'লো বাংলার‌ই জন্য
জানিনাকো র‌ইলো কি স্বাদটা, নাকি হবে অন‍্য।

                ।।ল‍্যাংচা ভাজার ঘি।।
                                
শক্তিগঢ়ের ল‍্যাংচা খেয়ে রাজার হ'লো দাস্ত
তাই নিয়ে বদ‍্যি বামুন সবাই এখন ব‍্যাস্ত।
বদ‍্যি এবার কি যে বলেন তাই নিয়ে সব চিন্তা
অনেক ভেবে বিধান শুধু শর্করা জল নোনতা।

মন্ত্রী মশাই আদেশ দিলেন কারনটা চাই জান্তে
বিষক্রিয়া হলো নাকি ল‍্যাংচা ভাজার ঘৃতে ।
নগর কোটাল সেনাপতির ঘুম উঠেছে মাথায়
বিষাক্ত ঘি কেমনে এলো দোকানিরা কোথায়।

ডোম ব‍্যটারা বলতে এলো হচ্ছে কেমন সন্দেহ
ভাগাড় হতে মড়া পশু যাচ্ছে কোথা বলবে কেহ।
মড়া পশুর চর্বি থেকে চলছে ঘিয়ের ব‍্যবসা
ল‍্যাংচা ভাজার ঘিয়ের সাথে ঐ ভেজাল‌ই ভরসা।

                   ।।কলের খুড়ো ।।
                                 
রায় সুকুমার লিখেছিল খুড়োর কলের ছড়া
আজকালকার ছেলেদের হয়নিকো তা পড়া।
ছড়া পড়ার সময় কোথা, সব সময়েই ব‍্যস্ত
গাদা গুচ্ছের হোম‌ওয়ার্ক করতে হবে মুখস্ত।

ভোর না হতেই ইসকুলে যায় ফেরে বেলা গেলে
এর পরেতে মগ্ন হবে টিভির কার্টুন দেখার ছলে।
খেলাধুলার সময় কোথা এর পরেতে টিউশন
শনিরবি সুইমিং,ড্র‌ইং,মিউজিক‌ আরো অপশন।

ছড়ার ব‍ই সব তোলা থাক হতেই হবে ডাক্তার,
আই আই টি , আই এ এস নয়তো বা মোক্তার।
এগুলোই সব সামনে রেখে ছুঁতে হবে চলরে চল                      ছেলেবেলা চুলোয় যাক ওটাই এখন খুড়োর কল।

                     ।।।ভোরের স্বপন।।
সবাই বলে স্বপন যদি ভোরের তবে হবেই সত্তি
সিংহ মশাই সেই আশাতেই ঘুমোয়নি তিন রাত্তি।
ভোরের বেলায় চোখটি বোঁজে স্বপন যদি আসে
লাল নীল সবজে হলুদ শুধু ফুলকি চারি পাশে।

লটারি টিকিট কিনে এনেছে হপ্তা খানেক হবে
কোটি টাকার প্রাইজ যেন সেইতো এবার পাবে।
বালিশ নিচে টিকিট রেখে ঘাপটি মেরে থাকে
অনেক আশা দেখবে স্বপন ভোর হ‌ওয়ার ফাঁকে।

ধীরে ধীরে স্বপনটাকে কষ্ট করে বাগিয়ে এনেছে
খবর এল কোটি টাকা এবার সেইতো জিতেছে।
লম্বা গাড়ি হিল্লিদিল্লি আরো কত চিন্তা মাথায় ঘোরে
পোড়া কপাল প্রাইজ কোথা,ধাক্বা দিয়ে গিন্নী,দিল স্বপন মেরে।

                     

                  ।।ভুতের বাবার শ্রাদ্ধ ।।

ভুতের বাবার শ্রাদ্ধ হবে ভুষুন্ডির মাঠে
এধার ওধার থেকে কতো ভূতেরা সব জোটে।
শ্রাদ্ধ হবে ভুতের বাবার , চাট্টিখানি কথা
লাইন দিয়ে ভূতেরা এল কামিয়ে তাদের মাথা।

গেছো মেছো মামদো একানরে ডাইনি কানাভুলো
ব্রহ্ম‍দত‍্যি স্কন্ধকাটা শাঁখচুন্নি আরও কতকগুলো।
পেত্নীরাও সব এসে গেছে ঘোমটাতে মুখ ঢেকে
লজ্জা সরম হতেই পারে ভিনদেশী ভুত দেখে।

কতক গেল শ‍্যাওড়া গাছে কতক বেলের ডগে
এতো ভুতের জায়গা কোথা কেউ ভাবেনি আগে।
যক্ষ পিশাচ আলেয়ারা নিদান দিল, জায়গা আবার কি
শ্রাদ্ধ বাড়ির খাওয়াই আসল মাছ মাংস, সাথে গব‍্য ঘি।

শ্রাদ্ধ হলো যেমন তেমন এবার খাওয়ার পালা
বিদেশ থেকে ভিয়েন এলো ভরবে ভুতের থালা।
খাচ্ছে যত ফেলছে অধিক চিলচিৎকার গন্ডগোল
একেই বলে ভুতের বাবার শ্রাদ্ধ, বল হরিবোল।

                       ।।জন্মদিন।।

রাত বারোটায় শুরু হ'লো গিন্নীর জন্মদিন
কেক কেটে আর নেচে গেয়ে তা ধিনা ধিন ধিন।
মাথা খারাপ , প্রশ্ন করে বয়স কতো হলো
মে মাসেতে পঁচিশ তারিখ, সেই জানাটাই ভালো।

কেকের ওপর নামটি লিখে দিলেম ভালো বেসে
বাগিয়ে ছুড়ি কাটলো সেটা লাজুক লাজুক হেসে।
টুকরো করে এক এক করে দিলো সবার মুখে
করতালি আর হ‍্যাপি বার্থডে গাইছি পরম সুখে।

আঁচল ভরে গিফ্ট পেয়েছে ফুল্লি স‍্যাটিসফেকশন
ব‍্যস্ত আরো সারাদিনের ফেসবুক নোটিফিকেশন।
সবারই হয় জন্মদিনে হাসিমজা নানারঙের আলো
কখনো কি কেউ ভেবেছে জীবনের একটি বছর গেল।

                     ।।পাঁউরুটি ঘন্ট ।।

পাঁওরুটি ঘন্ট খেতে চাও রেসিপি টা লিখে নাও
একবাটি ঝোলাগুড়,কুচি করে তিনপিস রুটি দাও।
সরষে এলাচ লবঙ্গ দিতে হবে গোটাদশ গোটাদশ
পরিমাণ মতো লাগে ভিনিগার, টমেটো ও চিলিসশ।

কুচি করা প‍্যাঁজ দিয়ে মিহি বাঁটা পোস্ত
দুইদানা হিং সাথে ঘিয়ে ভাজা ছোট আলু আস্ত।
সব কিছু মিশিয়ে ফ্রাইপ্যানে টস করে
ওভেনেতে গরম হবে মিনিট দশেক ধরে।

সেঁকে খাও, মাখনেতে মেখে খাও ডিমেতে চুবিয়ে খাও
মাংসের কিমা, শষা ও প‍্যাঁজ সহ স‍্যান্ড‌উইচ করে খাও।
কতভাবে খাওয়া যায় বিলিতি এই পাঁউরুটি টাকে
যাইকরো, দোহাই নয়া রেসিপিটা যেন গোপনেই থাকে।

     ।।ব‍্যাঙের ছাতা ।।

এই শীতেতেই কিনেছি
দার্জিলিংয়ের ছাতা
বৃষ্টি এলে মাথায় দেবো
বাগিয়ে তাহার হাতা।

কড়কড়িয়ে মেঘ আর
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি
ব‍্যাঙের ছাতার তলায়
থাকবে সবার দৃষ্টি।

মেঘের ডাকে তালে তালে
ডাকবো ঘ‍্যাঙর ঘ‍্যঙ
এক লাফেতে আসবে
যত ব‍্যাঙাচি ও ব‍্যাঙ।

ছাতা খুলে আছি বসে
অনেক ভাবনা ভেবে
আষাঢ় শ্রাবণ দেরি আছে
ফাগুন এখন সবে।

।।ছড়া লেখার ছড়া ।।

ছড়ার নেশায় মেতেছে
বোসপুকুরের নেপাল।
ছন্দ কোথায়, কাগজ ছিঁড়ে
কলম ভেঙ্গে হচ্ছে কতো নাকাল।

পন্ডিতেরা নস্যি নিয়ে
দিলেন কতো বুদ্ধি।
ছড়া লেখা নয়তো সোজা
করতে হবে খাতাকলম শুদ্ধি।

শুদ্ধি করতে নেপাল ব‍্যাটা
ছোটে হরিদ্ধারে।
বস্তাভরে কাগজ নিয়ে
বসে গঙ্গাপাড়ে।

একএক করে কাগজ কলম
রাখে বাহির করে
ভেস্তে গেল ছড়া লেখা
দমকা হাওয়ায় উড়ে গঙ্গাজলে।

।।ভুতের ব‍্যাথা ।।

বেল গাছ তাল গাছ  
বট আর শ‍্যাওড়া
হাইওয়ে জুড়ে ছিলো
দিল্লি থেকে হাওড়া।
ভুত পেত্নী দত্যি দানব
যতো ছিলো সেসব ডালে
এখন তারা থাকবে কোথা
এক এক করে কাটা গেলে।

গা ছমছম আঁধার রাতে
ভুতেরা সব থাকতো মেতে
গান বাজনা নাচন কোদন
গ‍্যালা পার্টি অমার রাতে।
বিজলী বাতির চকমকিতে
গাড়িঘোড়া লোকজন শুধু হৈচৈ
রোজ‌ই এখন পূর্ণিমা তো
নিশা রাতের ভুতুরে ব‍্যপার কৈ।

এমনি করে ধিরে ধিরে
ভুতেরা সব পালায় ফিরে
মানুষ ভুতের অত‍্যাচারে
আসল ভুত আজ হাঘরে।
নাতি পুতি জানবে কি আর
ভুতের গল্পগাছা
ভুত পেত্নীর অনেক ব‍্যথা
জানবে কবে মোদের বাছা।

      ।।রাজকচুরি।।

রাজকচুরি শুধু রাজাই খাবে
এটা কেমন কথা।
প্রজার নালিশ বলেই ফেলে
মন্ত্রী চুলকে মাথা।

খবর শুনে রাজামশাই এর
কুঁচকে গেল ভুরু
বেশতো ছিলাম নিজের মতো
এই কি তবে আন্দোলনের শুরু।

বিশেষ সভা ডাকা হলো
হাজির পারিষদ
জানতে হবে কি কারণে
হচ্ছে সবাই বদ।

এতো রকম নোনতা আছে
তেমনি আছে মিষ্টি
সেসব ছেড়ে কেন প্রজাদের
রাজকচুরি দৃষ্টি।

শান্ত করতে দেশের প্রজা
রাজ পারিষদ ব‍্যস্ত
নতুন আইন নতুন খাবার
পালটে দিয়ে সমস্ত।

প্রজার জন্য এবার থেকে
ছোট ছোট খাস্তা
ক্লাবকচুরি নাম হবে তার
মুখরোচোক ও সস্তা।

   ।।নতুন ছড়া ।।

রেলগাড়ি ঝকঝক।          
ধুমো ছাড়ে ভকভক
বুক করে ধকধক
খোকা করে বকবক
টেঁকো মাথা চকচক
বুড়ো দাদু ফকফক।।

মিনি করে ম‍্যাউম‍্যাউ
তার মাসি হাউমাউ
ভুলো ডাকে ভেউভেউ
রেগে গেলে ঘেউঘেউ
হাতি যদি হাতাহাতি
দাদু নাতি মাতামাতি।।

বৃষ্টি পড়ে ঝপঝপ
ভিজে গেলে সপসপ
গাঁটে ব‍্যাথা কটকট
মাথা ব্যথা ছটপট
কান মলা কশকশ
চোখে জল টসটস।।

পিলে রুগী খাইখাই
হাঁফ হলে সাঁইসাঁই
পাখা ঘোরে বনবন
মাছি ওরে ভনভন
ব‍্যাঙ ডাকে মকমক
তারা জলে ঝকমক।।

নদী জল টলটল
বয়ে চলে কলকল
ছিপ চলে ছপছপ
মাছ ধরে খপখপ
হাঁস ডাকে প‍্যাঁকপ‍্যাঁক
ছানা করে চ‍্যাঁকচ‍্যাঁক।।

নব বধু ফুটফুটে
লাল শাড়ি টুকটুকে
শিশু হাসে খিলখিল
জ্ঞান বাড়ে তিলতিল
বেশি হলে আই ঢাই
ছড়া শেষে বাই বাই।।

     ।। হিজিবিজি ।।

হাসিরাম ঘাসী মুখে সদাই হাসি
চিকেনের বদলে রোজ খায় খাসি।
বেচারাম মান্না বেশি কিছু খান না
এক পাকে শাকাহার নিজ হাতে রান্না।
কেনারাম ঘোষ শুধু একটাই দোষ
দাম দিয়ে ঘরে ফিরে করে আপশোস
নিধিরাম হাতি আদতে সে তাঁতি
দিনভোর তাঁত নিয়ে করে মাতামাতি।
হরিরাম পোদ্দার হালচাল বোঝা ভার
ব‍্যবসাটা ভালো বোঝে কিছু নেই হারাবার।
বাঁকারাম ঢালি মুখে মাখে কালি
সঙ সেজে নাচ করে পায় হাততালি।
জয়রাম জানা হাসতে তার মানা
হাসলেই ছিটকে পড়ে  বাঁধানো দাঁত কখানা।
প‍্যালারাম হেলা রোগ তার মেলা
ছত্তিশ রকম ওষুধ খায় রোজ দুই বেলা।
বলরাম সর্দার মোটা কালো গোঁফ তার
রোজ রাতে মালিশেতে গাওয়া ঘি দরকার।

  ।। ঘটক বিদায় ।।

নগেন বাবু ঠিক করেছে
ছেলের বিয়ে দেবে
আদ‍্যিকালের ঘটক ছেড়ে
অনলাইনে যাবে।
হাজার হাজার পাত্রী সেথা
বায়োডাটা পেলো
বাঁশ বনেতে ডোম কানা
সব গুলিয়ে গেলো।
কোনটা এলো বিদ‍্যাধরী
রঙটা ভীষণ চাপা
কোনটা আবার অপসরা
নেইকো চুলের হ‍্যাপা।
একটা যদি কুমড়ো পটাশ
আরেকটা লিকলিকে
জানিনাকো কেমনে পাবে
ম‍্যাচিং পাত্রী টিকে।
কেউ যদি বা রাঁধতে পারে
চিংড়ি মোচার ঘন্ট বা শুক্ত
কেউ আবার জানিয়ে রাখে
কেনা খাবারের ভক্ত।
কোনটা বলে শপিং শুধু
অফিস ফেরার পরে
অনেক রাতে বাড়ি এলে
খাবে গরম করে।
কার‌ও আছে গানের গলা
কেউ নাচেতে ব‍্যস্ত
কোনটা শুধু সোজা তাকায়
কোনটা ট‍্যারা আস্ত।
হতাশ হয়ে নগেনবাবুর
যাচ্ছে মাথা ঘুরে
হঠাৎ দেখে বৌ ছেলেতে
ঢুকছে নিজের ঘরে।

    ।। নতুন হিসেব।।

কিলো খানেক চাঁদের আলো
লিটারে মাপা ঝড়
এমন হিসেব দেখতে হলে
যেতেই হবে নকলগঢ় ।

গ‍্যালন মাপে পাওয়া যাচ্ছে
বস্তা ভরা মুড়ি
চাঁদের আলো কিনতে হলে
বোলাও চাঁদের বুড়ি।

সকাল বেলায় উঠে দেখি
সূয‍্যি গেছে পাটে
মাইক নিয়ে বলছে সবাই
রোদ বিকচ্ছে হাটে।

ইঞ্চি ইঞ্চি ভালোবাসা
লকারে রাখা ভরে
চাবি গুলো হারিয়ে গেছে
খুলবে কেমন করে।

    ।। তেঁতুল পাতায় ন'জন ।।
যদি হয় সুজন তেঁতুল পাতায় নজন
কিন্তু অঅঅপ্র যখন হাজির টেঁপির মায়ের মতন?
নয় বোনেতে টেঁপির মা'রা খোশমেজাজে থাকে
আদর করে পাড়ার লোকে তিনমনি ডাকে।
লম্বা চ‌ওড়া দশাশই চেহারা, কিন্তু নরম মন 
এক এক বোনের ওজন পাক্কা তিন মণ।
সত্যি বলছি ভরসা রাখ একটুও না বাড়িয়ে
তিনটে খাসি হজম করে অন‍্যকে সব থামিয়ে।
ডজন পাঁচেক লুচি সাঁটায় পাঁচটি লঙ্কা দিয়ে
কিলো কিলো ভাত উড়ে যায় কয়েক চামচ ঘিয়ে।
কাজের বাড়ি কেউ ডাকেনা সবাই থাকে ত্রাসে
এই বুঝি বা নয় বোনেতে লাইন দিয়ে বসে।
টেঁপির মায়ের বিয়ে হয়েছে ওজন বাড়ার আগে
তারপরে আর বর জোটেনি বাকি বোনের ভাগে।
এবার বলো এমন সুজন কেউ কি আছে এখন
তেঁতুলপাতায় বসতে দেবে যদি আসে ঐ নজন?

।। ভাল্লাগে না ।।

ভাল্লাগে না ভাল্লাগে না
লঙ্কা খেলে ঝাল লাগেনা।
সারারাত জেগেই কাটায়
পদি পিসির ঘুম আসেনা।

কেউ লেখেনা কেউ লেখেনা
পোষ্টকার্ড আর কাজে লাগেনা।
চিঠি দিয়ে কেউ প্রেম করেনা
শুভ বিজয়ায় কোনো চিঠি আসেনা।

নানা রকম পোশাক আশাক
নিত্য নতুন ফ‍্যাশন।
দামের বেলায় আকাশ ছোঁয়া
তবু কার‌ও গা ঢাকেনা।

ছেলে মেয়ে বিয়ে করে বড় হয়েছে
প্রাইভ্রেসির চাপ বেড়েছে।
বাবা মায়ের লাগি জায়গা কম
শেষের বেলা নয়া ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম।

     ।। বিদেশ ভ্রমণ ।।

নরেনপুরের হরেন বাবু যাবে সিঙ্গাপুর
কোন দিকেতে না জানলেও জানে অনেক দুর।
আকাশ পাতাল ভাবছে সাজটা কেমন হবে
বিদেশ যখন চুলের কটিং বিদেশি ছাঁট‌ই দেবে।
ধুতি ছেড়ে পেন্টালুন অর্ডার দেওয়া আছে
বাটার জুতো জাপানি টুপি ন‌ইলে সব‌ই মিছে।
কথা শুধু ইংরেজিতে, বাংলা বলা বন্ধ
গায়ে মাথায় শুধু বিদেশি তেল সাবানের গন্ধ।
ভাত মুড়ি আর মাছের ঝোল সব‌ই তো ইন্ডিয়ান
পাউরুটি আর চাউমিনেই হবে বিদেশ অভিযান।
হাত দিয়ে খায়না এখন কাঁটা চামচ চায়
দিন রাত পাল্টে গেছে সিঙ্গাপুরের সময় মহড়ায়।
রোজ সকালে আসর বসে নিয়ে কচি থেকে বুড়ো
সভার মাঝে প্রশ্ন বেশী ফোকলা দাঁতে তাড়িণী খুড়ো।
বলো হরেন কোথায় পাবে প্রাতঃকৃত‍্যের মাঠ
ঢেঁড়স মুলো কিনতে যাবে কোন সে দুরের হাঠ।
এতরকম ভাবনা গুলো মাথায় কিলিবিলি করে
মনের জোরে সবার কাছে তবু চ‍্যালেঞ্জটাকে ধরে।
বিমান টিকিট কাটতে গিয়ে ঘটলো যত বিপত্তি
ভিশাটাতেই গন্ডগোল তাইতো যাওয়ায় আপত্তি।

    ।। সিংহ রাজার হাল ।।

সিংহ  রাজার মেজাজটা খুব মন্দ
সর্দি লেগে নাকদুটো তার বন্ধ।
রাজকাজেতে নেইকো মন ,পাচ্ছে শুধু ঘুম  
সেই ফাঁকেতে জঙ্গলেতে চলছে ছুটির ধুম।
শেয়াল বলে আমি রাজা, এক‌ই বলে হাতি
বেনিয়ম আর হট্টগোল তাতেই মাতামাতি।
বাঘ ভাবে এ কি কথা, আমি এখনো আছি
নিয়ম মতো সামলে দিতে আমিই ধরব অছি।
কানে যেতেই সিংহ রাজা ধড়ফড়িয়ে ওঠে
এই বুঝি বা রাজত্বটা অন্য কারও ঘটে।
গোষ্ঠী কোঁদল বেড়ে গিয়েছে জঙ্গলের মাঝে
নিজ নিজ মিছিল করে যাচ্ছে রাজার কাছে।
মুঠো মুঠো তুলসি মধু বাসক পাতা শেষ
কার‌ও কথায় নাকের ভেতর নস‍্যি গুঁজে বেশ।
সময়মতো কতই হলো সিটিং মিটিং ইটিং
হাল ফেরাতে বাধ‍্য হয়েই সিংহ মশাই ফিটিং।

               ।।খাওয়ার কথা ।।

বেশী যদি খেতে চাও কম খাও তবে
কোন কিছু করিলে করিও তা ভেবে।
কুমড়োপটাশ হোৎকাবাবুর খাওয়াই হল কাজ
তার‌ই লাগি বাড়ির সবাই করছে সাজো সাজ।
সকালেতে কাগজি লেবু, ক্ষিদে যাতে বাড়ে
একটু বেলায় ছাতু গোলা কেজি খানেক করে।
পচিশ খানা লুচি বাঁধা জলখাবারের পাতে
ছোলার ডাল ঝোলা গুড় সমান সমান সাথে।
এবার আসি দুপুরবেলায় খাবারের লিষ্টি নিয়ে
প্রথম পাতেই আধ কেজি ভাত ঘি ও আলুভাজা দিয়ে।
এর পরেতে আসতে থাকে তরকারি পাঁচ রকম
মাছ মাংস কয়েক বাটি আর ভাত গরম গরম।
শেষ পাতেতে চাটনি পাঁপড় মিষ্টি দ‌ই আস্ত হাঁড়ি
রসগোল্লা ডজন খানেক তবেই হবে পেটটি ভারি।
এর পরেও কি জানতে চাও রাতের খাওয়ার লিষ্টি
লজ্জা করে, ধরন দেখে বুঝে নাও দিওনাকো দৃষ্টি।
এমনি করেই ভালোই ছিলো খাওয়াদাওয়ার দিনগুলো
মধুমেহ আর অম্লশূলের ব‍্যাথা,বেশি খাওয়াই কাল হলো।
বদ‍্যি এসে নাড়ী টিপে নিদান দিলো অনেক ভেবে
এবার থেকে, বেশী যদি খেতে চাও কম খাও তবে।

           
              ।। অসুরবিনাশিনী ।।

দুর্গা এল বাপের বাড়ি সিংহে স‌ওয়ার হয়ে
লক্ষী গনেশ সরস্বতী আর কার্তিক সাথে নিয়ে।
পায়ের তলে অসুর মোষের ভেতর থেকে
দশটি হাতে অস্ত্র নিয়ে আঘাত হানে বুকে।

তোমার মাগো দশটি হাত শক্তি তোমার কত
তাই বলে কি আঘাত দেবে তোমার ইচ্ছে মত।
ফি বছর কি এক‌ই ভাবে মরতে ভালো লাগে
অনেক হলো আঘাত ছেড়ে ক্ষমাই  কর আগে।

নকল নেতা  নকল সমাজ ভেজালের অন্ত নাই 
শিশুর খাবার বিষে ভরা সামাল দিতে নীলকন্ঠ চাই।
অনেক অসুর মারলে তুমি দাপিয়ে চারিদিক
পারলে কি মা শাস্তি দিয়ে এসব করতে ঠিক।

       
             ।।হোঁচট খাওয়া।।

আলাপ হলো আবীর হাতে বসন্ত উৎসবে
সাথে সাথে নামটি তাহার জানা হয়নি তবে।
আবীর দেওয়ার আগেই মুখটি লাজে লাল
তবুওতো  রাঙ্গিয়ে দিলাম গালটি লালে লাল।
ধীরে ধীরে কয়েক ধাপে জানা গেল নাম
কি করে সে, ভালো লাগা, কোথায় তাহার ধাম।
সবটা যখন জানা হলো বাঁধলো বুকে শেল
হোঁচট খেলাম, ভেস্তে গেল প্রথম প্রেমের খেল।
মাম্মি ডেকে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে মা'কে
নন্দিনীও ঘাড় বেঁকিয়ে মিচকি মুখে দেখে।
বিফল হলো হোলি খেলা প্রথম প্রেমের আশা
বাক্স বেডিং গুছিয়ে আমি ফিরে এলাম বাসা।।

                  ।।ছেলেবেলা।।
                        
অনেক কথা মনে পড়ে ভুলিনি তো ছোট্টবেলা
লাললাঠি পিট্টু খেলা ডাংগুলি ও লাট্টু খেলা।
তালপাতার ব‍্যাট বানিয়ে ক্রিকেট খেলা হতো
চোর পুলিশ আগডুম বাগডুম আরও কতো শত।
পুকুর জলে সাঁতার কাটা পৌষে চড়ুইভাতি
বর্ষা কালে জলে ভেজা আর কাদায় মাতামাতি।
আখের শালে আখ চেবানো আগুন পোয়া রাতে
কাঁচা ছোলা বা আলু পুড়িয়ে অল্প নুনের সাথে।
রাংতা দিয়ে রাজার মুকুট নাটক নাটক খেলা
মাটি এনে খেলার ছলে ঠাকুর গড়ার পালা।
বিকেলেতে ইস্কুলের ঘন্টা শেষে ছুট্টে বাড়ি আসা
অপেক্ষাটা পূরণ হতো পেয়ে মায়ের ভালোবাসা।
দূর্গা দালান যাওয়া আসা কাঠামো হ‌ওয়ার সাথে
প‍্যাকেট নিয়ে বিজয়া প্রণাম নাড়ু জমানো তাতে।
হঠাৎ কখন বড় হয়ে পালটে গেল জীবন
তবুও কি ভুলতে পারি ছোট্ট বেলা কেমন।।

           ।। চুরিবিদ‍্যা মহাবিদ‍্যা ।।

গয়লা পাড়ার ময়লা ছেলে
হাড় জিরজিরে রোগটি পিলে।
হাঁটতে গেলে এগিয়ে আসে পেটটা
দু পা গেলেই আটকে আসে দমটা।
তাবলে ভেবোনা শুয়েই থাকে ঘরে
আঁধার হলেই রোজ এঘর ওঘর করে।
ছিঁচকে চুরি,সিঁধেল চুরি,
বাটপারি বা ঠগ ও জোচ্চুরি।
অভাব চুরি স্বভাব চুরি বেষ্ট প্রফেশন
ক্ষান্ত নয় এরপরে চাই আরও প্রোমোশন।
পুকুর চুরি অনেক হলো সারা
নেক্স্ট ভেনচার আকাশ চুরি করা।
টাকা চুরি, শিশু চূরি, প্রেমিকার মন চুরি
ক্ষমতায় থাকতে দলে দলে ভোট চুরি।
নেতা মন্ত্রী চুরি করে যদিও আইন কড়া
চুরিবিদ‍্যা মহাবিদ‍্যা যদি না পড়ো ধরা।

      ।। নকল বাবাজী ।।

নকলগঢ়ের বাবাজী সঙ্গে থাকে মাতাজী
সাধন ভজনে ব‍্যাস্ত শিষ্যরা আর গুরুজী
দান খয়রাত আসতে থাকে দুর দেশ হতে
লব‍্যচস‍্য ভোজন ভজন চলছে দিনে রাতে
রোজ সকালে জলখাবারে গরম পেঁয়াজি
হায়দেরাবাদী বিরিয়ানী আর খাসী রেয়াজী

কাটছিল দিন এমন করেই বিলাস ব‍্যাসনে
লোক ঠকানোর কারখানাতে সিদ্ধ আসনে
নিত্য নতুন বাণী আর ধর্মকথার আলোচনা
ফুলে ফেঁপে সিন্ধুকেতে জমছে সোনাদানা
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে সঠিক সময় হলে
ফন্দি ফিকির ধরতে যখন আসবে দলে দলে

  ।। ভূতভবিষ্যৎ ।।

ভূতের আবার ভবিষ্যৎ
নাকি ভবিষ‍্যতের ভূত
সঠিক জবাব দিতে পারে
ধুমসো মোটা গুঁফো যমদূত।

আধফোটা সব শিশুর মুখে
চাঁদের হাঁসির মিল খুঁজোনা
ভূতের গল্প বলে তাদের
চুপ করানো আর যাবেনা।

হাজার হাজার ভূতের সাথে
লড়তে হবে জীবন ভোর
শিশুরা সব বদলে গেছে
জাগছে এখন কাটিয়ে ঘোর।

ভূত পেত্নী দত‍্যি দানব
তাদের নিয়ে অনেক ধাঁধা
কোমর কষে হচ্ছে লড়াই
ভূতের কিলে হবেই বাধা।

        ।। ইচ্ছে হলো ।।

ইচ্ছে হলো আজকে আমি রাজা
সেই ইচ্ছের পিঠে স‌ওয়ার হয়ে
চোখ রাঙিয়ে হাত পাকিয়ে
মেজাজ নিয়ে দিতে হবে সাজা।

বেনিয়ম, বেচাল যত অনাসৃষ্টি
কোমর বেঁধে আনবো ডেকে
উজিড় আমলা উপর থেকে
জব্দ হবে বুঝবে কাহার দৃষ্টি।

সামাজিকতার নিকেশ করে
ভেজাল মেশায় শিশুর দুধে
খাবার থেকে নানা অসুধে
বিবেক বিহীন মানুষ  ঘোরে।   
 
সুযোগ বুঝে নকলনবীশ
পরীক্ষাতে ডোন্ট কেয়ার
ঘুষে ম‍্যানেজ হবে কেরিয়ার
নীতির মূল্য করছে ভ‍্যানিশ।

ইচ্ছে প্রদীপ সেই আলাদীন  
কখন কোথায় আমার হবে       
ন‌ইলে ইচ্ছেগুলো মরেই যাবে
তবে ক‍্যামনে সমাজ হবে রঙ্গীন।

          ।। টাকের ওষুধ ।।
তিনটে টেঁকোর চিন্তা তাদের টাক
প্রতিদিন চুল খসিয়ে হচ্ছে মাথা ফাঁক।
মিছেই ভাবো খগেন দেখেছো কি খবরটা
মাথা চুলকে খগেন শুধোয় কোনটা?
তুমি দেখছি কোনো খবর‌ই রাখোনা
টাকের ওষুধ বেরিয়েছে তাওকি জানোনা।
বল কি খুড়ো এতো বড়ো খুশির ব‍্যাপার
টেকো মাথায় ফিরবে আবার চুলের বাহার।

তাহলে খুলেই বলি ব‍্যপারটা
ধ‍্যানে মগ্ন সাধু নিয়ে বিরাট জটা।
হিমালয়ের হিমেল হাওয়া
হয়নি জটার যত্ম নেওয়া।
বছর কয়েক এমনিই হলো পার
এক এক করে কমল জটার ভাড়।
খেপে গিয়ে সাধুবাবা ধরে শিবের জটা
একি হলো টাক নিয়ে কি কাটবে জীবনটা?

উপায় নেই, শিবকে হতেই হলো রাজি
তার‌ই জটার চুলে জিতবে সাধু বাজি।
নন্দী ভৃঙ্গী দুটো চুলে মিশিয়ে দিয়ে ছাই
কয়েক শিশি ওষুধ করে ধরিয়ে দিল তাই।
নিজের মাথায় ঘষে সাধুর ফিরল আবার চুল
সেই খবরটাই পেপারেতে বেরোয় বিলকুল।
পেটেন্ট নিতে সাধু এখন আপীল করেছে
টাক চুলকে খুড়ো ভাবে,বল্লে হবে খচ্চা আছে।

   ।।দাঁতের ব‍্যাথা ।।
হনহনিয়ে সকাল বেলায় যাচ্ছো কোথা
মিনমিনিয়ে নরেন বলে দাঁতের ব‍্যাথা।
ঠনঠনিয়ে কেঁপেছিলাম গিয়ে অমরনাথ
টিসটিসিয়ে ব‍্যাথায় ঘুমোইনি তিন রাত।
ছটফটিয়ে মড়তে বাকি কোন উপায় নেই
মড়মড়িয়ে দাঁত গুলোকে তুলে দিতে চাই।
ফিসফিসিয়ে কেউবা বলে লাগাও লবং তেল
খিলখিলিয়ে কেউবা হেসে দেখায় কতো খেল।
মসমসিয়ে রসুন খেতে কেউবা বিধান দিলো
কিড়মিড়িয়ে মেজাজটা পায়না কোনো আলো।
চিকমিকিয়ে ওঠে ফোকলা দাদুর চোখ জোড়া
ফকফকিয়ে বলে, না উঠিয়ে পাচ্ছোনাকো ছাড়া।
খটমটিয়ে কেউ বা বলে তুলে ফেলাতো সোজা
কড়মড়িয়ে খাবো চিবিয়ে, রেখেই দাঁতের মজা।
টনটনিয়ে বাড়ছে ব‍্যাথা  হাজার কথার ভারে
তড়তড়িয়ে এগোয় নরেন নিজের মতো করে।

         ।। আজগুবি ।।
মাছ রাঙা নাকি মাছেদের রাঙাব‌উ
বকখালির মাছ বক ছাড়া পাবে কেউ?
মাছে ভাতে বাঙ্গালী থাবা পরে সেখানেও
যদি সেটা কমে যায় ভেবেছ কি কখন‌ও।
ছিটেফোঁটা তেল নেই তেলাপিয়া মাছে
বাঁশপাতা মাছ নাকি বাঁশগাছে আছে!
বাটা মাছ খেতে কি যেতে হবে বাটানগরে
বেলে খেলে নাকি ছেলে হবে ফি বছরে।
মোরলার মাথা খেয়ে বুদ্ধিটা বাড়ে ক‍ই
জামাই কি ছাড়ে কভু মাথাটা যখন রুই।
মাথা মোটা কাতলা মুড়িঘন্টে দেবে
চোয়ালটা শক্ত করে বোয়ালটা খাবে।
ক‌ই ক‌ই কর কেনো ক‌ই তার নাম
তেল ক‌ই খেতে হলে জানা যাবে দাম।
পাবদাটা পাতলা তাবলে ট‍্যাংরা কি ল‍্যাংড়া
পুটিখালির পুঁটির টক দিয়ে কাঁচা আমড়া।
বর্ষার সেরা ইলিশ, ফিশফ্রাইয়ে ভেটকি
তবুও চেটেপুটে কেউ খায় যদি পায় শুটকি।

               ।। হাসির কথা ।।
হাসির কথা শুনলে হাসতে তাদের মানা
এমন নিয়ম যেথায় থাকুক মোদের নেই জানা।
কত শত হাসি আছে হিসেব কে আর রাখে
অত বুঝে হাসতে গেলে হাসিই  আড়াল থাকে।
শিশুর মুখে সরল হাসি নেতার হাসি বাঁকা
পন্ডিতদের গভীর হাসি বোকার হাসি ফাঁকা।
প্রথম কিছু না বুঝে, তারপরের হাসি বুঝে
অন্তিমেতে আবার হাসে সবার হাসির মাঝে।
প্রেমিক যুগল মুচকি হাসি আড়চোখের ফাঁকে
মায়ের তৃপ্তি হাসি শিশুকে প্রথম কাঁদতে দেখে।
শুষ্ক,কাষ্ঠ,বক্র,দন্তুর হরেক হাসির অন্য মানে
অট্ট হাসি ডাক্তারের কেন হাসে সবাই জানে।
কুঞ্চিত প্রসারিত এছাড়াও উৎকট বিকট
নীরব সরব আরও কত,সময়েই হয় তা প্রকট।
মন খুলে হাসতে গেলে মনের জোর লাগবে
যখন তখন হাসবেনাকো অন‍্যে কিবা ভাববে।
ইদানিং নানা চাপে মানুষ ভুলে গেছে হাসতে
তাই তারা যায় লাফিং ক্লাবে মনকে ঠিক রাখতে।

সেদিনও রাত ছিল

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
মুখে কোনো ভাষা ছিলনা।

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
পকেটের কোনো ভার ছিলনা।

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
বসার কোনো অবসর ছিলনা।

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
ভরসা ছিল কোনো তাড়া ছিলনা।

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
ব‍্যস্ত তুমি আমায় মন ছিলনা।

সেদিনও রাত ছিল
পূর্ণিমার চাঁদ ছিল
বিরহের ঝাপসা চোখে দৃষ্টি ছিলনা।

।। খাওয়া দাওয়া ।।
বাবুদের ভোজবাড়ি
কচি পাঁঠা ছড়াছড়ি।
ভেটকির ‍চপ মুচমুচানি ভাজা
ডাবের সাথে চিংড়ি মাখা তাজা।
হলুদ মাখা ভাত দিঅ্যাছে
তাতে বাদাম আর ঘি চপচপাছে।
ঘটা করে নাম র‍্যাখেছে পোলাও
পিচিক করে ঠোঁটের থেকে পালাও।
কত রঙের খাবার কত গন্ধে ভরা
তবুও গাঁ বাঙালির মন পাবিনা তোরা।
যত‌ই তোরা রাঁধিস যতন করে
খাওয়ার পরে প‍্যাটটো নাই ভরে।
লালপাটের ঝোল আলুপোস্ত সাথে
মনের মতো হবে মোটা চালের ভাতে।
খানিক ডাল বাঁটা আর টক মোরলার
লঙ্কা পেঁয়াজে কামড় সেটাই স্বাদ বাংলার। 
ভূড়ভূড়ানি গন্ধে ভরা তামাক কোথা পাই
খাওয়ার পরে হজমি দিয়ে হজমটা চাই।

।। আরও খাই ।।

ঘোড়া কেন ছোলা খায়
চিল খায় মাছ
হনুমান কলা খায়
হাতি কেন সেই গাছ।

মামুরা বুঝি ঘুঁষ খায়
দালালেরা খায় তোলা
বোকারা তো গালি খায়
চালাকেরা মুখে দেয় তালা।

লালু ভুলু গুলি খায়
বুকে নিয়ে কত জ্বালা
জনগন ঘোল খায়
শেষ নেই তার পথ চলা।

জলে মাছ খাবি খায়
চাতক খায় আকাশের জল
ফুলে ফুলে আলি মধু খায়
পায়নাতো এককণা ফল।

শিশু খায় ডিগবাজি
কভু ঘরে কভু মাঠে
ফেলুরাও তাই খায়
ফাঁকি দিলে তার পাঠে।

আরও কতো খাওয়া আছে
কুলবেনা ছোটখাটো লিষ্টি
জীবনের শেষ পাতে খেতে হবে
রকমারি ঔষধ, নাও থাক মিষ্টি।

   ।। তেঁতুল বুড়ি ।।
তেঁতুল গাছের পাস দিয়ে
কেউ যেন না যায়
তেঁতুল বুড়ি থাকে সেথা
টকের গন্ধ সারা গায়।

পরণে তার সাদা শাড়ি
গলায় তেঁতুল বিচির মালা
চোখ দুটি তার আমড়া পাড়া
কান কুলোর থেকেও ঝোলা।

পাড়ার যত ছেলে মেয়ে
রাগিয়ে তেঁতুল বুড়ি ডাকে
কিড়মিড়িয়ে তখন বুড়ি
তড়াক করে ধরতে যায় তাকে।

কপাৎ করে ধরবে তাকে
ভুলেও কাউকে কাছে পায়
গিলিয়ে যাবে তেঁতুল পাতা
যতদিন না গন্ধ ছাড়ে গায়।

।। হোৎকার কান্ড ।।

ঘটক বাবুর হোৎকা ছেলে
সবাই ডাকে মোটকা বলে
নিত্য দিনের এক‌ই কথা
শুনেই বাড়ে মনের ব‍্যাথা।

কেউ বলে খাওয়া কমাতে
কেউবা বলে এক্সারসাইজ
আবার কেউ বলে শুধু হাঁটতে
কার‌ও উপদেশ শুধুই মালিশ।

আহারে আমার একটি ছেলে
খাওয়া কমালে তার কি চলে
মায়ের আদর‌ উথলে ওঠে
রকমারি পদ ঠুসছে ঠোঁটে।

বাবা এবার চেপে ধরে
ঢেড় হয়েছে খাওয়া আদর করে
নিয়ম করে এবার তোমায়
হাঁটতে হবে সকাল ছটায়।

জামা জুতো হলো জুতসই
দুই পা গিয়ে হাঁফায় শুধু
মাথা ঝিমঝিম বুক ধড়ফড়
এযে অন্য ব‍্যামো,হাঁটা হলো ক‌ই!

পাড়া পড়শী বন্ধু এলো ঘটক বাড়ি
বিধান দিলো সবাই তাড়াতাড়ি
দোহাই তোমার যেমনি আছে থাক
আগের মতো হোৎকা ইচ্ছে ভরে খাক।।

  ।।‌ভোরের আলো।।
আলো জানালায় মারে উঁকি
ছোট্ট খোকা বিছানায় নেই
কোথায় গেল সবকে দিয়ে ফাঁকি।
চারিদিকে খোঁজ, বাঁধলো গন্ডগোল
কোথায় গেল কিযে হলো
অনেক ডেকেও পায়না কোন রোল।
পাড়া পড়শী বুদ্ধি দিলো মিলে
ফোন করো থানায় তারাই  দেবে খুঁজে
একি হলো, অনেক খুঁজে ফোনটা নাহি মেলে।

ফোনটা কোথায় সেটাই আগে চাই
খোঁজ খোঁজ খোঁজ খোকা ছেড়ে
মিস কলের‌ই শব্দ ধেয়ে ছাদেতে সবাই।   
অবাক কান্ড,সবার নজর গেল থেমে
এক কোনে আপন মনে  খোকা মোবাইলে
মগ্ন হয়ে ব‍্যস্ত সেতো ভিডিও গেমে।
সময়টাতো বদলে গেছে টেকনোলজিতে
শিশুর থেকে শৈশবটা কোথায় চলে গেল
কচিকাঁচারা সব ছেড়ে মোবাইল কেন পেলো!!

    ।। কলকাতার খাবার ।।
কত কিযে খেতে বাকি কলকাতা শহরে
একে একে সবকিছু খেতে হবে আহারে।
দিলখুশ এর কবিরাজি,বাগবাজারের দৈ
শ‍্যামবাজারের মাংস কষা তার তুলনা কৈ।
বিরিয়ানি চাই আমিনিয়া, কুলফি র‍্যালিসের
মোগলাই এখনও সেরা মেট্রোর অনাদির।
গাঙ্গুরামের কাঁচাগোল্লা রসগোল্লা কেসি দাস
কল্পতরুর পানের রেশ থাকবে কয়েকমাস।
মিত্র কাফের ফিস কবিরাজি, ফুচকা হেদুয়ার
গুরুদ্বোয়ারার কেশর চা তুলনা নেই যে তার।
প‍্যারামাউন্টের শরবৎ, কেকে ফ্ল্যুরিzএর নাম
বলরামের জলভরা আর কচুরিতে পুঁটিরাম।
পিটার ক‍্যাটের চেলো কাবাব চাইনিজে ওয়ালডর্ফ
নিজামের কাঠি কাবাব, বাদশার খ‍্যাতি রোল।
বিখ্যাত কফি হাউস আর কালিকার তেলেভাজা
এখনো ট্রিনকাসে আছে সেই বার ও গানের মজা।
নিউ মার্কেটে নাহুম বেকারী এখনো আগের মতো
এছাড়াও আছে ফুটপাত খানা, খাওনা ইচ্ছেমতো।

        ।। পিসির বিয়ে।।
বলতে পারো ফুল পিসিমার নাকটা
কেন হুতুম পেঁচার পারা!
দিনের আলোয় দেখা যায়না
রাত্রে চোখে যেন সন্ধেতারা।
হাসলে পরে ঠিকরে বেরোয়
মুলোর মতো দাঁত কখানা।
খিমচি কেটে পিসি আসে
বাচ্চারা সব যখন করে বায়না।
ভাবতে পারো কেউ কখনও
পিসির বিয়ে করার সখ জেগেছে!
পাশের গাঁয়ে আইবুড়ো বংশীবদন
তার‌ই খোঁজে পিসি সেথা একাই গেছে ।
বার্নিশ করা রঙটি তাহার চোখদুটি ট‍্যারা
একটু যেন টেনে হাঁটে মাথায় বড়ো টাক।
বল্লে কথা বেড়িয়ে যায় ফোকলা দাঁতে
তিনমনি বংশীবদন পেটটা জয়ঢাক।
যেমন পাত্রী মন্দোদরি পাত্র ভজহরি   
এমন সুযোগ যায় কি কভূ ফেলা।
এক দেখাতেই হলো দুজন রাজি
সময় মতো পিসি হাজির নিয়ে বরমালা।।

।। প্রেমের ছড়া ।।
বাঁশ বাগানের আড়াল থেকে তোমায় দেখেছি
একাদশীর চাঁদের আলোয় তোমায় দেখেছি
বর্ষা ভরা কালো মেঘের তলে তোমায় দেখেছি
ভেজা জানালার আবছা আলোয় তোমায় দেখেছি।

মাঝ রাতেতে আলো আঁধারে তোমায় ভেবেছি
লালপাড় সাদা শাড়ির ঘোমটায় তোমায় ভেবেছি
খাঁ খাঁ রোদের ভরদুপুরে তোমায় ভেবেছি
বাচ্চা বুড়ো সবার ভয়েই তোমায় ভেবেছি।

কল্পনা আর গল্পতেই সবাই তোমায় জেনেছি
সাহস নিয়ে শ্মশানেতে তোমায় জেনেছি
শাঁখচুন্নি আর পেত্নী মাঝে তোমায় জেনেছি
বেল গাছে আর শেওড়া গাছে তোমায় জেনেছি।

হলফ করে কেউ কি বলতে পারে তোমায় পেয়েছি
আজগুবি সব ঘটনায় অকারণে তোমায় পেয়েছি
নেই তাও অতীত হয়ে আছো তাই তোমায় পেয়েছি
প্রেমের ছড়া লিখতে গিয়ে কখন যেন তোমায় পেয়েছি।

             ।। চোরের দাবী ।।
মাঝরাতেতে করবে চুরি ঘোষ পাড়ার কেলো
ধরা পড়ে মারের ভয়ে পিঠে বেঁধেছে কুলো।
এদিক ওদিক উ়ঁকি মারে ভাবে যাবে কার বাড়ি
চারিদিকে ছড়িয়ে আছে নানান চোরের সারি।
কত প্রেমিক ভুল বুঝিয়ে চুরি করে প্রেমিকার মন
সুযোগ বুঝে দিনেরাতে কতো ঘটছে অঘটন।
সমাজ সেবার নামে চুরি এতো অহরহই ঘটছে
তবুও ওদের মালা দিয়ে বরণ করাও চলছে।
আরও কতরকম চুরি আছে নানারকম পথে
লম্বা সেসব লিষ্টি হবে কুলোবেনা একসাথে।
কার বাড়িতে করবে চুরি কার বাড়িতে নয়
কেলো ভাবে এই প্রফেশন ছাড়তেই বা হয়।
এত চোরের মাঝে কেলো হচ্ছে দিশেহারা
আন্দোলনের পথেই হবে নিজেদের রক্ষা করা।

         ।। কুম্ভকর্ণ ।।
কেউ কি কখনও ভেবেছিল
ঘুমের ওষুধ ছাড়াই কেমন করে
বিশালদেহী কুম্ভকর্ণ টানা ছমাস ঘুমিয়েছিল?
ইন্দ্রাসনটা চাইতে গিয়ে সরস্বতীর ছলে
ব্রহ্মা তারে নিদ্রাসনের বরটি দিল ভুলে
যার ফলেতে ছমাস ঘুম একনাগাড়ে চলে।
এর পরেতে  ঘুমটি যখন ভাঙ্গে একটি দিনের তরে
হাতি ঘোড়া মন্ডা মিঠাই যতো খাবার আছে
উদরে ভরে নাকটি ডেকে ফের ছমাস ঘুমিয়ে পড়ে।
দিব‍্যি ছিল খাওয়া দাওয়া ছমাস ছমাস ঘুম
বাধ সাধলো হনুমানের দলটি নিয়ে রাম       
আর সীতার তরে রাবনের সাথে যুদ্ধ করার ধুম।
মাঝ গগণে যুদ্ধ যখন রাবন নাজেহাল
কাড়া নাকাড়া ভেরী বাজিয়ে ভাঙ্গালো কাঁচা ঘুম
লড়তে হলো রামের সাথে,কুম্ভকর্ণের তাতেই হলো কাল ।।

        ।। নটবরের নাক ডাকা ।।
মড়ার মতো ঘুমায় রোজ‌ই নটবর সিং
নাকে গুঁজে একবাটি তেল আর দুই ঢেলা হিং।
আশপাশের লোক চমকায় শুনে নাকের ডাক
জমাট বাঁধা ঘুম কাটেনা যতই বাজাও ঢাক।
গিন্নী তার বিরক্তিতে শোয় অন‍্য ঘরে
তবুও সদাই  শিউরে থাকে নাক ডাকার ডরে।
হঠাৎ সেদিন কেন জানিনা আওয়াজ গেছে থেমে
কারণটা কি জানতে সবাই গুটি গুটি জমে।
সবাই ভাবে নটবরের দম আটকে গেছে বুকে 
দুঃখ পেলেও এবার ওরা ঘুমাবে আপন সুখে।
ঘরে ঢুকে কান্ড দেখে  সবার চক্ষু স্থির
নটবরের নাকের ভেতর আটকে,লেজ শুদ্ধ ইঁদুর।
খপাৎ করে লেজটি ধরে টান মেরে যেই দিয়েছে হাঁক
বেরিয়ে এল আস্ত ইঁদুর, শুরু হলো আবার নাকের ডাক।

             ।। ভাল্লা রাজার হাল্লা ।।
ভাল্লা দেশের রাজার বেড়ে গেছে হাল্লা
আওয়াজ টা ভেসে বেড়ায় দিল্লি থেকে কাল্লা।
কারণটা কি জানতে চেয়ে মন্ত্রী মশাই ব‍্যাস্ত
ব‍্যপার দেখে সান্ত্রী থেকে বদ‍্যি সবাই সদা ত্রস্ত।
আমলা এসে নোটিশ খানা সাঁটিয়ে দিলো দোরে  
শব্দ দূষণ মাত্রা এখন ছাড়িয়ে গেছে বেড়ে।
তাতো হলো হাল্লা করার কারণটা এবার খুলে বলি
কদিন ধরে রাণীর বায়না হলো বাপের বাড়ি চলি।
পূজোর সময় নেচে রাজার কোমরে বেদম ব‍্যাথা
এই বয়সে সেবার অভাব সেটাই ভাবার কথা‌।
দুচার কথা হ‌ওয়ার পরে মেজাজ লাগাম ছাড়া
উপায় কি আর, সামাল দিতে তাইতো হাল্লা করা।
অগত‍্যাই স‍্যাকরিফাইস,বাপের বাড়ি ক‍্যানসেল
রাজার বন্ধ হলো হাল্লা করা,বন্ধ হলো খিটকেল।

।। ভুতের প্রেম ।।
পেত্নী আমার ব‌উ
এও জানেনা কেউ
একগলা ঘোমটা নিয়ে
ঘুঁটে দেয় লাইন দিয়ে।
আর একটা আছে শাকচুন্নী
সেই তো আমার ছোটগিন্নী
শাঁখা পলা পড়ে দুটো লম্বা হাতে
মাছ চুরি করে রোজ‌ই রাত বিরাতে।
তার‌ও আগে ছিলো স্কন্ধকাটা
মালবদলের সময় থেকেই সমস‍্যাটা
মালা থাকেনা মুন্ডছাড়া গলা        
অগত‍্যা ডিভোর্স দিয়ে ক্ষান্ত হলো পালা।
কতরকম অঘটন  ঘটছে  একেক করে
নিশির ডাকে বেড়িয়ে পড়ি ঘুমের ঘোরে
এক নাগারে কাঁদরা মা কাঁদে বনের ধারে
তারপরে আলেয়া, প্রেমিক সেজে লাইন মারে।

মায়া মমতা কারোরই নেই
ভুত বলে কি আমি পুরুষ ন‌ই
এতোরকম মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে চলা
কান মলেছি প্রেমের কথা আর যাবেনা বলা।

।। তোড়ায় বাঁধা ছড়া ।।
হাট্টিমা টিম টিম
আর দেয়না মাঠে ডিম।
ব‍্যঙ্গমা আর ব‍্যাঙ্গমির কাহিনী
এখন আর টানেনা শিশু বাহিনী।
হুঁকোমুখো মেনিমুখো যতো হোক হ‍্যাংলা
পিজেমাস্ক ও জুলবেবীতে মেতে ওঠে বাংলা।
সাপ নিয়ে বেড়ায় না আজ আর বাবুরাম
একুশে আইনের ভয়ে হলো সর্দার নিধিরাম।
ইটের পাঁজার নিচে থাকে কুমড়োপটাশ বর্মা
হাসতে হাসতে ঞ্জান হারালো ভীস্মলোচন শর্মা।
পান্তভূতের জ‍্যন্ত ছানা ঘুরে বেড়ায় চারদিকে
বিদঘুটে আর ছিঁচকাদুনে ছবি আছে নোটবুকে।
যতই কাটো ছড়া , লেখো আবোল তাবোল
বোম্বাগঢ়ের গোঁফ চুরিতে বাধলো গন্ডগোল।

ঠাকুমার ঝুলিতে এখন গল্প মেলা ভার
টিভি আর মোবাইলে শিশুর হচ্ছে সময় পার।।

।। চোরের সাথে সেলফি ।।

সত্যি বলছি সেদিন রাতে
সেলফি তুলেছি চোরের সাথে
ঘুমের ঘোরে হাঁচতে গিয়ে
চটকে গেল ঘুম নাকের ফুটো দিয়ে
আবছা আলোয় দেখতে পেলুম
টেবিল তলে কার‌ও হাজিরি দিচ্ছে মালুম
অ্যাই কে রে, সাহস করে দিলুম হেঁকে
আমি চোর বলেই পালাতে চায় এঁকেবেঁকে
পায়ে পড়ি ভুল করেছি ঢুকবোনা এই বাড়ি
নাক মুলছি কান মুলছি করবোনা আর চুরি
খপাৎ করে ধরে বলি পালাবি কোথা
আরে ছাড়ো, মার খেয়ে সর্বাঙ্গে বড্ড ব‍্যাথা
ভরসা রাখ কথা দিচ্ছি একটুও মারবোনা
সেলফি তোলা হলেই আর কখনো ধরবোনা
মোবাইলটা বাগিয়ে ধরে চোরের সাথে সেলফি তুলে
ফেসবুকেতে পোষ্ট করেছি লাইক দেখি সবটা ভুলে।

।। টাকের ব্যাথা ।।

চুল নিয়ে চুলোচুলি করে শুধু বাঙ্গালী
হতাশায় ভরা টাক তাই চুলের কাঙ্গালি।
ঘোষেদের বড় ব‌উ ঢেউ খেলে মাথাভরা চুলে 
ঘোষবাবু টেকো মাথা অভিমানে মুখ গেছে ঝুলে।
খোঁজে তার চুলগুলো বিলি কেটে টাকের ভেতর
গিন্নী তাহার মান ভাঙ্গাতে রাখেনা কোনো কসুর।
এর‌ই মাঝে জন্মদিনের গিফ্টে বন্ধু দিল আয়না চিরুনি
ঘোষবুড়োর মেজাজ খানা ছিটকে ওঠে যেন তেলে বেগুনি।
নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে দোরেতে দেয় খিল
চুলোচুলি ছেড়ে কেমনে হবে কর্তা গিন্নীর মিল।
মানিগুণী কতো লোকের টাকে ভরা মাথা
টাকের বাহার বলতে তারা পায়না কোনো ব্যাথা।
দায়িত্ব টা বড়‌ই গভীর টাকের উপর চুল চাট্টিখানি কথা
বাজার থেকে মানানসই উইগ কিনে ভরানো হলো মাথা।

      ।। নানাবিধ কারবার  ।।

নীলমণি সরকার নানাবিধ কারবার
হেলেসাপ ধরে বলে ধরা দিল অজগর।
নজরানা দালালির মুশকিল সারাবার
অপারগ হলে বলে এইলেখা বিধাতার।
ফাঁদেতার যদি পড়ে কখনতো একবার
তারথেকে বেরিয়েছে সেরকম নেই আর।
বেচুবাবু হয়ে ঘোরে শহরের চারিধার
খুঁজেপেতে বারকরে কেনারাম বারবার।
দোরখুলে অনেকেই কথা শোনে একবার
হয়তো বা অনেকেই হয়ে ওঠে জেরবার।
নাজেহাল হয়ে গেছে দিতে গিয়ে লেকচার
হন্যে হয়ে ঘুরেফিরে সংসার চলা ভার।
নিত্য আসে কত চিন্তা অন‍্যভাবে বাঁচবার
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দ‍রকার।
এইবার রাজনীতি,ঝুঁকিনেই কামাবার
যতদিন রাখাযায় কসরত ঠকাবার।

 

      ।। পাঁচু গিন্নীর নেশা ।।


পাঁচু খুড়োর গিন্নী দিব‍্যি চেবায় খৈনী

ফিচিক ফিচিক থুতু চারদিকে ঘিন্নি ঘিন্নি।

নেশার মধ্যে আছে ডজন খানেক পান

শোবার আগে রাত্তিরেতে রোজ‍ই আফিম খান।

আরও আছে মনখারাপে হালকা দুচার পেগ

সকাল সকাল গুল না হলে আসেনা তার বেগ।

চা কফি তো লেগেই আছে প্রতি ঘন্টা ধরে

সময় মতো না যদি হয় মেজাজ খারাপ করে।

সন্ধ্যাথেকে অন্য নেশা টিভি সিরিয়াল লাগাতার

আবার মোবাইলে ফেসবুকে ক্লান্তি নেইতো তার।

আরেক নেশায় মগ্ন, দিবারাত্রি পিএনপিসি করা

উৎসাহ তার দ্বিগুন যখন চামচেরা দেয় ধরা।

  ।। কাজের মেয়ে ।।

ধড়ফড়িয়ে মিসকলেতে ঘুম ভাঙ্গালো বাসন্তি

দাস বৌদি ফোন করে জানতে পারে

কাজে যাবলাই দ‍্যাহে বড্ড দরদ ঘুমাইনি সারারাত্তি।


খিঁচড়ে গেল মেজাজখানা পাঁচের পারা মুখ

পাশের বাড়ির শান্তি শুধোয় রাগের কারণখানা

বাসন্তি আবার কামাই তাইতে বিগড়ে গেছে সুখ।


জামা কাপড় ফ‍্যাশনের জিনিস যখন যেটা চায়

তোষামোদ করেই চলি মেজাজ ঠাণ্ডা করে

সেসব কিছুই মনে রাখেনা সুযোগ যখন পায়।


ঠিক বলেছেন মাসীমা এ এক চিরদিনের বালাই

ঠাকুরের কাছে হা পিত্তেশ করি চাইনা আর কিছু

কাজের মেয়ে যেন টিকে থাকে আর না করে কামাই।


ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখা ' সুখী গৃহকোন'

কর্তা গিন্নী ছেলেপুলের আনন্দের সংসার

সব‌ই বৃথা যদি না পাও কাজের মেয়ের পদার্পন।


যতই হ‌ও নারীবাদী নজরে  সমাজের নিত্য নতুন ব‍্যাথা

ব‍্যাস্ত তুমি হরেক রকম নরম গরম নানান ইসুতে

তবুও নারীমহলে আলোচনা কাজের মেয়ের কথা।


পুরুষরাই করবে নেশা এমনতো নেই লেখা 

তাই নিজের কাঁধেই দায়িত্বটা পাঁচু গিন্নী একা।

হাসি মুখে পাঁচুখুড়ো সবটি জোগান দেয়

গিন্নীকে শান্ত  যদি রেখে দিনটি ভালোই যায়।

এতো নেশা করলে তবে সময় পাবে  কোথা

পাঁচুতে আর নেশা নেই পাঁচুর বাকি দিনও বৃথা।

Comments

Popular posts from this blog

বাঁকুড়ার টেরাকোটা

                                                                বাঁকুড়ার টেরাকোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের শিল্পকর্মের এক বিশেষ স্থান   অধিকার করে আছে।  বাঁকুড়ার  পোড়ামাটির  ঘোড়া ও হাতি নির্মাণের  প্রধান শিল্প  কেন্দ্র গুলি   হল পাঁচমুড়া,  রাজাগ্রাম, সোনামুখী ও হামিরপুর।  প্রত্যেক শিল্পকেন্দ্রের নিজস্ব স্থানীয় ধাঁচ ও  শৈলী রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচমুড়ার  ঘোড়াগুলিকে চারটি ধাঁচের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম  বলে মনে করা হয়। বাঁকুড়ার ঘোড়া এক  ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। ঘোড়া ছাড়াও বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী উট , হাতি , গনেশ ,  নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত মূর্তি তৈরী করে  টেরাকোটা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।  রাঢ় অঞ্চলে স্থানীয় লৌকিক দেবতা ধর্মঠাকুরের পূজায় টেরাকোটা ও কাঠের ঘোড়া ব্যবহৃত হয়। অনেক গ্রামে বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে গ্রামবাসীরা ঘোড়া মানত করে থাকেন। ভারতের বহু গ্রামে পবিত্র অশ্বথ্থ গাছের তলায় পোড়ামাটির পশুর মূর্তি সাজানো থাকতে দেখা যায়। এগুলি গ্রামবাসীদের মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার প্রতীকস্বরূপ।  এগুলি মূলত গ্রাম্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য  নির্মিত হলেও, আজকাল সমগ্র বিশ

অপরাজিতা

অপরাজিতা বহু বৈচিত্রে ভরা অপরাজিতা।  দেবী দূর্গার বিভিন্ন রুপের মধ‍্যে আরও একটি রুপ হল  অপরাজিতা। অপরাজিতা কথার অর্থ অপরাজেয় অর্থাৎ যাকে কেউ পরাজিত করতে পারেনা।   মহর্ষি বেদব‍্যাসের বর্ণনা অনুযায়ী অপরাজিতা দেবীকে আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ শক্তিদায়িনী রুপে মান‍্যতা দেওয়া হয়েছে। ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য দেবতারা নিয়মিত আরাধনা করেন। বিজয়া দশমী বা দশেহরার সময় শক্তির রুপীনির আর এক প্রতীক হিসেবে কল্পনা করে পুজো করা হয়ে থাকে যাতে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে যেন জয়ী হ‌ওয়া যায়। অপরাজিতা পুজোর পর সেই লতা হাতে ধারণ করার রীতি অনেক স্থানেই চালু আছে। মানুষের বিশ্বাস এই অপরিজিতা রুপে দেবী দূর্গা সমস্ত অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে ধর্মের পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করে। দেবী পূরাণে ও শ্রী শ্রী চন্ডীতে এরকম কাহিনী বর্ণীত হয়েছে।             ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে এই ফুলের আবিষ্কার যার ব‍্যাপ্তি সুদূর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা পর্যন্ত। ভারতের মোটামুটি সব স্থান ছাড়াও বিদেশে যেমন ইজিপ্ট, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, ইরাক, আরব, আবগানিস্তানে এই ফুলের গাছ পাওয়া যায়। গ্ৰীষ্ম কাল ছাড়া