Skip to main content

যাত্রাপালা


আজকের যাত্রাপালা লক্ষণের শক্তিশেল। রামায়নের কাহিনী অবলম্বনে বীর লক্ষণের সাহসীকতার পালা লক্ষণের শক্তিশেল। শ্রেষ্ঠাংশে কোলকাতার বিক্ষ্যাত ইন্দ্রদেব অপেরার বিশিষ্ট অভিনেতা অমল কুমার। আসুন দেখুন এ বছরের শ্রেষ্ঠ যাত্রাপালা লক্ষণের শক্তিশেল। হাওড়ার এক মফস্বলে রাস্তায় রাস্তায় একটা রিক্সায় মাইকে প্রচার করে চলেছে আর গোছা গোছা হ্যান্ডবিল বিলোচ্ছে। অন্য সবাইএর মতো শিবানীর কানেও গেছে , ছুটে রাস্তায় গিয়ে একটা হ্যান্ডবিল জোগার করে নজর পড়ে অমল কুমারের ছবিটার  দিকে। সত্যিই সুন্দর বলিষ্ঠ এক সুদীপ্ত চেহারা। ছবিটা দেখার পর থেকেই শিবানীর মনের ভেতরটা কেমন যেন ছটপট করতে লাগলো , একবার দেখা হলে বেশ হতো।সম্বিৎ ফিরে পেতই দুউর কিযে বোকার মতো ভাবছি। সন্ধে হতেই সেজেগুজে একটু তাড়াতাড়িই পাড়ার আরো দুজন বন্ধু মিলে যাত্রা দেখতে পৌঁছে গেছে। পালা বেশ জমে উঠেছে। দশানন রাবণের সঙ্গে লক্ষণের ভয়ানক যুদ্ধে যতটা না আগ্রহ তার থেকে বেশি নজর অমল কুমারের দিকে। বিভোর হয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজেকে কখন হারিয়ে ফেলেছে বুঝতেই পারেনি।
চাকরির সুত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে মুখোমুখি হতে হয়েছে। অনেক মধুর অভিজ্ঞতাও যেমন ছিলো আবার তেমনই অনেক তিক্ত পরিস্থিতির স্মৃতিও আছে। বেশ কটা বছর আমাদের কোম্পানীর প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসের দায়িত্বে ছিলাম।একজন কর্মী যতোদিন বেঁচে আছে তারপর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ফাইনাল টাকা পয়সা বুঝে নিচ্ছে ততদিনই ঠিক আছে । কিন্তু তার মাঝে কেউ মারা গেলেই যত বিপত্তিকে কে দাবী করছে কোনটা সঠিক কোনটা নকল এসব বোঝা খুই জটিল। পেমেন্ট হবে চিঠি ছাড়া হয়ে গেছে হঠাৎ এক দ্বিতীয় স্ত্রী উপস্থিৎ, পেমেন্ট বন্ধ,  এমন ঘটনা অনেক ঘটেছে। কিছু কিছু ঘটনা বেশ রোমাঞ্চকর।

অন্যদিনের মতো সেদিনও স্বভাবিক ভাবেই আমার কাজে ব্যস্ত। দরজায় টোকা দিয়ে এক অল্প বয়সের বিধবা।পরনে হালকা বেগুনী পাড়ের সাদা শাড়ী , উস্কখুস্ক চুল এক মায়াবী চেহারা নিয়ে অনুমতি চাইছে
আসতে পারি!
আমার পাশেই বসতো এক সহকর্মী কল্যাণ ,বন্ধুস্থানীয় খুবই আবেগপ্রবণ। ঐরকম চেহারার মহিলাকে দেখে দ্বিগুন আবেগ তারিত হয়ে তারাতারি ডেকে ভেতরে আসতে বলে। ভেতরে এসে আমাদের টেবিলের সামনে দাঁড়ায় ও আমার চোখাচোখি হতেই কেমন যেনো থতমত খেয়ে আমার দিক থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়।
স্বতপ্রণোদিত হয়ে কল্যাণই জানতে চাইলো বলুন কিছু বলবেন।
মহিলাটি একদম বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কি হলো কি বলবেন বলুন।
এইবার সেই মহিলা আর নিজেকে সামলাতে না পেরে তার শাড়ীর আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। খুবই স্বাভাবিক কারনে কল্যাণ আরও  বিচলিত হয়ে ওঠে      বলতে থাকে,
আরে আরে এ কি করছেন, আপনি এভাবে কাঁদছেন কেন !বসুন বসুন জল খান এই বলে জলের গ্লাস এগিয়ে দেয়। জল খেয়ে একটু স্বাভাবিক হয়ে ভদ্রমহিলা বলতে শুরু করে,
আমার নাম শিবানী ঘোষ। স্বামী মানে স্বামীর নাম ...একটু ইতস্তত করে বলে ৺অমল ঘোষ। এই কারখানাতেই কাজ করতেন  মাস চারেক হ’ল কাজ করতে করতে একটা দূর্ঘটনায় মারা যায়।
কল্যাণ সমবেদনা জানিয়ে বলে ,কি করবেন বলুন সবই কপাল। নইলে আপনার মতো মহিলার এই অবস্থা।    
আর এক প্রস্থ কান্না মেশানো গলায় শিবানী বলে ,
আমার আর কেউ নেই। এতোদিন তো দিব্যি চলে যাচ্ছিলো কিন্তু ও চলে যাওয়ার পর সংসার চালানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মা বাবা বা শ্বশুড় বাড়ির কেউ?
বিধবা মা ছিলো বছর দুয়েক হলো মারা গেছে বাড়ি জমি বেদখল হয়ে গেছে , ব্যাস বাপের বাড়ি শেষ। আর শ্বশুড় বাড়ির কেউ কোনদিন খোঁজ নেয়না , হিংসে, ঐযে একটু ভালো আাছি আমরা।
থাক থাক আর বলতে হবেনা। ভেরি সরিআমাদের এখন কি করতে হবে!
না মানে প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি সব পাওনাগুলো যদি একটু তারাতারি পেমেন্টের ব্যবস্থা করে দেন  তাহলে এই অভাগী অন্তত কিছু দিন চলে যাবে।
এরকম কেন বলছেন এতো আমাদের কর্তব্য। কি পজিশন দেখছি।ডিটেল্সটা এই কাগজে লিখে দিন।
এতক্ষণ মোহিত হয়ে এক সদ্য বিধবার করুণ কহিনি শুনছিলাম। কোন মন্তব্য করার আগে কল্যাণ  নিজেই অফিস পিয়ন বলরামকে ডেকে ছোট্ট চিরকুটটা ধরিয়ে দিয়ে ফাইলটা আনতে বলে।আমার কাছে জানতে চায়
এটা কি..
মুখের কথা শেষ করার আগেই বললাম , হ্যাঁ হ্যাঁ এই ফাইলটা তোমারই। দেখো কি করতে পারো।
তার মধ্যেই বলরাম ফাইলটা নিয়ে এসে হাজির করে।
দ্বিগুন উৎসাহে ফাইলটা কিছুক্ষণ ভাল করে পরীক্ষা করে আশ্বস্ত করে , কোনো চিন্তা নেই সব ঠিকই আছে দিন দশেক পরে পেমন্ট ডেট আছে । চিঠি চলে যাবে।
আপনি আমার কি যে উপকার করলেন। আচ্ছা চলি নমস্কার বলে চলে গেলেন।
বেশ কিছুক্ষণ আবেশের মধ্যে থাকার পর কল্যাণই নিরবতা ভঙ্গ করে বলে  কি করুণ অবস্থা। এতো অল্প বয়সের বিধবা , সারাটা জীবন পরে আছে কি করে যে কাটাবে।
অত চিন্তা করনা। পেমেন্টটা পাওয়া অবধি অপেক্ষা তারপর অন্যরকম। সব ব্যবস্থা করাই আছে যত সব কুমিরের কান্না, নাটক নাটক।
মানে সব অভিনয় করে গেল !
তবে আর আর বলছি কি , আমি সব জানি।দেখলেনা আমাকে দেখে কেমন থতমত খেয়ে গেল।
অ্যাঁ কি সব জানো?
সে অনেক বড় গল্প, বলতে গেলে সময় লাগবে। সময় লাগুক কি জানো বলে ফেল।
তাহলে শোন বলে বলতে শুরু করলাম।

লক্ষণের শক্তিশেলের নায়ক অমল কুমারের নাম আমরা আগেই শুনেছি। হাওড়ার মেয়ে শিবাণী প্রথম থেকেই একটু গায়ে পড়া স্বভাবের ছিল। যাত্রার আসরে নানা  অছিলায় অমলের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিল। সেই ইঙ্গিতটা কিন্তু ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিল। যাত্রার দল পরের দিনই চলে গেলেও অমল তার শরীর খারাপের অজুহাতে থেকে গেল। এরপর দিন কোন বুকিং নেই তাই কাছাকাছি একটা হোটেলে থেকে যায় এবং সে খবর শিবাণীর কাছেও চলে গেছিল। সকাল থেকেই খুব হাসিখুশি ভাব, বিকেলে মাকে তারাতারি  এক কাপ চা করে দিয়ে নিজে সাজগোজ  শুরু করে দিয়েছে । মায়ের চোখ, একটু অন্যরকম হলেই ঠিক নজরে পরে। শিবাণীকে বলে
কি ব্যাপার রে তোর এত সাজগোজের বহর কেন, কোথায় যাবি।
সাজগোজের আবার কি দেখলে রোজই তো এমনি থাকি।
না যেন একটু অন্যরকম।  ঠিক করে বল।
বেগতিক দেখে বলে বন্ধুর জন্মদিন।
বন্ধুর জন্মদিন! কোন বন্ধুর?
সে তুমি চিনবেনা। এই বলে কোনরকমে ম্যানেজ করে বেরিয়ে গেল।

মফস্বলের মোটামুটি একটা হোটেল। রিসেপশন থেকে খোঁজ নিয়ে দোতলার একটা ঘরে টোকা মারতেই অমল দরজা খুলে বলে হোয়াট এ সারপ্রাইজ, ভেতরে এসো।
আপনার নাকি শরীর খারাপ।
এতক্ষণ খারাপ ছিল, তুমি এলে সব ভালো হয়ে গেল।
কি যে বলেন।
ঠিকই বলছি, কি যেন নাম বলেছিলে তোমার ।
শিবাণী।
ও ইয়েস শিবাণী। কি খাবে বলো।
কিছু না শুধু আপনার খোঁজ নিতে এলাম।
এই রকম দুচার কথা বলতে বলতে শিবাণীর একদম কাছে এসে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে। অমলের সন্মোহিনী ক্ষমতাকে অস্বীকার ক্ষমতা শিবাণীর নেই তবুও জোর করেই ছাড়িয়ে নেয়,
এ কি করছেন আপনি।
কেন বুঝতে পারছনা ।
না আমি বুঝতে চাইনা। তারপর আর বেশিক্ষণ থাকেনি। আজকে আসি অনেক দেরি হলো।
পরদিন সকালে অমল হোটেল ছেড়ে দিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেয়।

            এরপর অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। অমল ও শিবাণীর মধ্যে যোগাযোগ আরও বেরেছে। কোলকাতায় ও বাইরে দেখা হয়েছে ঘনিষ্ঠতা আরও বেরেছে। একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। সময় পালটেছে ,যাত্রাপালার আর সেদিন নেই, অভিনয়ের সুযোগ কমে এসেছে, রোজগারও কমে এসেছে। অমল যাত্রাপালায় অভিনয় করা ছেড়ে দিয়েছে। তারপর নানা অফিস কল কারখানায় চাকরি করছে, এই ভাবে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের এই কারখানায় একটা চাকরি জোগার করে দুজনায় এখানে বসবাস করতে শুরু করেছে।
            কল্যাণ কৌতহল চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেলে, এ পর্যন্ত সবই ঠিক আছে কিন্তু আসল মজাটা কোথায় আর এতসব তুমিই বা জানলে কি করে!
            সেটা আর এক গল্প। আমার এক মাসতুতো ভাই, তারই বাড়ির পাশে ভাড়া বাড়িতে ওরা থাকে। একদিন ঐ ভাইএর বাড়িতে গিয়েছি দেখি ওরা স্বামি স্ত্রী দুজনায় বসে আছে আলাপ হল অমল খুবই মিশুকে ছেলে, কথা বলতে ভালবাসেযতক্ষণ ছিল তার জীবনের অনেক অভিজ্ঞতার গল্প করল। যাই হোক ছেলেটাকে মোটামুটি ভালই লেগেছিল। ওর স্ত্রী শিবাণীও দুএকটা কথা বলছিল। সেদিনের মতো ওরা চলে গেল আমিও আর কিছুটা থেকে চলে এলাম। কিছুদিন পরে আমার বাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আছি সেই অমল আমায় দেখে স্কুটার দাঁড় করে বলে,
            ভালো আছেন স্যার। আমি অমল।
            ও হ্যাঁ হ্যাঁ ভাল আছো তো, এদিকে কোথায় ?
            একটা কাজ ছিল তাই এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। আপনি বুঝি এখানেই থাকেন স্যার ।
            হ্যাঁ ঐতো আমার বাসা। একদিন এসো।
            আসবো। তারপর দুচার কথা বলে চলে গেল।
            না আমার বাড়িতে কোনদিন আসেনি তবে রাস্তাঘাটে দেখা হলে সম্মান দিয়ে কথা বলতো। ঐ মাসতুতো ভাইএর মাধ্যমেই দু একটা খবর পেতাম। ব্যাস ঐ পর্যন্তই।

            এমনি করে দুজনের ভালোই দিন কাটছিল। কিন্তু হরিষে বিষাদ। হঠাৎই একদিন কারখানায় কোন এক উঁচু জায়গায় কাজ করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শক লেগে প্রায় ৩০-৩৫ ফুট ওপর থেকে পড়ে গিয়েছে, প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতম জখম। কারখানায় কর্মরত অবস্থায় অ্যাকসিডেন্ট, ডিপার্টমেন্টের সবাই খুব তৎপর হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে ও তারপর শিবাণীকে খবর দেয়। যথাসম্ভব চেষ্টা করে কয়েকদিনে কিছুটা সুস্থ করলেও জানিয়ে দিল স্পাইনাল কর্ডে মারাত্মক ইনজুরি । অপারেশন করাও সম্ভব নয় লাইফ রিস্ক আছে। ওয়েট এন্ড ওয়াচ ছাড়া বিকল্প নেই।
           
            আবেগ ভরা কন্ঠে সমবেদনা জানাতে গিয়ে কল্যাণ বলে ওঠে, আহারে তারপর কি হল?
            ধিরে, ধিরে, তারপর আরও অনেক কিছু আছে। দুঃখ আছে প্রেম আছে বেদনা আছে দরদ আছে আর নাটক আছে।
            অমলের অবস্থা কিন্তু ভাল নেই। শারিরীক ও মানসীক দুভাবেই অবনতি ঘটছে। স্পাইনাল কর্ডের ইনজুরি আরও মারাত্মক আকার ধারন করল।কোমর থেকে নিচটা সম্পূর্ণ প্যারালাইজ হয়ে গিয়ে পাশ ফেরার ক্ষমতাও নেই।
শিবাণী রোজ হাসপাতালে আসে যতটা সময় দিতে পারে বেডের পাশে টুলে বসে কথাবার্তা বলে, মিথ্যা আশ্বাস দেয়। দিগন্ত, অমলেরই সহকর্মী মোটামুটি একই বয়সী, রোজই স্কুটার করে শিবাণীকে হাসপাতালে ও বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার অলিখিত ভার নিয়েছিলো। দরকার মত বাজার দোকানটাও করে দিচ্ছিল।প্রথম প্রথম একটু জড়তা একটু সঙ্কোচ থাকলেও আস্তে আস্তে তাদের মেলমেশাটা অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। এখন এটাই স্বভাবিক হয়ে গেছেওরা দুজনে আরও সাহসী হয়ে উঠছিল। মৃত্যু পথযাত্রী অথর্ব স্বামীর  বর্তমানেই এই অবৈধ দেহসর্বস্য প্রেমের খেলা চলছে। অমলের অথর্ব্য শরীরটা  হাসপাতালের বিছানায় এলিয়ে পড়ে আছে কিন্তু বোধ শক্তি অটুট, নিজের চোখের সামনে তার বৌএর এরকম বেলেল্লাপনা দেখতে হচ্ছে আর নিজেকেই ধিক্কার দিচ্ছে। চোখের সামনেই যদি এই না জানি আড়ালে কতখানি নিচে ওরা নেমেছে।

            এরপর কাহিনী কিন্তু খুব দ্রুত এগোতে থাকে। অমলের মৃত্যুর জন্য ডাক্তার, ডিপার্টমেন্ট , বন্ধুবান্ধব ও শিবাণী সবাই মানসিক ভাবে প্রস্তুত হয়েই ছিল, শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই অন্তিম লগ্নটাও একদিন উপস্থিত হল, অমল মারা গেল।  পারলৌকিক কাযকর্ম যথারীতি সম্পন্ন হয়ে গেল, স্বাভাবিক ভাবেই শিবাণীকে এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়নি। এরপর দিগন্তর আসা যাওয়ার কোন বাধাই রইলনা, অবলীলাক্রমে প্রেমপর্ব চলতে থাকলো। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যু অনেকেই চাপ দিয়ে শিবাণীকে দিয়ে কারখানায় একটা দরখাস্ত করানো হলো। একবার এই ডিপার্টমেন্ট, পার্শোনাল ডিপার্টমেন্ট, ইউনিয়ন এইসব নানা রকম হ্যাপা। এ ব্যাপারে যত ঝক্কি ঝামেলা ঐ দিগন্তই অবশ্য সামলাচ্ছে। চাকরীর ব্যবস্থা মোটামুটি পাকা হয়ে গেছে যেকোন দিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে যাবে।
            বলো কি, আশ্চর্য ব্যাপার একদম বুঝতে পারিনি। কি সুন্দর অভিনয়টাই করে গেল।

 
            অমলের ফাইন্যাল সেটেলমেন্টের সবটাই মাস খানেকের মধ্যে পেমেন্ট হয়ে গেছে। পার্শোনাল ডিপার্টমেন্টে শিবাণীর  চাকরিটা হয়ে গেছে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে জয়েন করেছে। আর হ্যাঁ মন্দিরে গিয়ে দিগন্ত ও শিবাণীর বিয়েটা হয়ে গেছে। এখন ভালো আছে, ভবিষ্যতে কেমন থাকবে সময়ই বলবে।



Comments

Popular posts from this blog

বাঁকুড়ার টেরাকোটা

                                                                বাঁকুড়ার টেরাকোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের শিল্পকর্মের এক বিশেষ স্থান   অধিকার করে আছে।  বাঁকুড়ার  পোড়ামাটির  ঘোড়া ও হাতি নির্মাণের  প্রধান শিল্প  কেন্দ্র গুলি   হল পাঁচমুড়া,  রাজাগ্রাম, সোনামুখী ও হামিরপুর।  প্রত্যেক শিল্পকেন্দ্রের নিজস্ব স্থানীয় ধাঁচ ও  শৈলী রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচমুড়ার  ঘোড়াগুলিকে চারটি ধাঁচের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম  বলে মনে করা হয়। বাঁকুড়ার ঘোড়া এক  ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। ঘোড়া ছাড়াও বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী উট , হাতি , গনেশ ,  নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত মূর্তি তৈরী করে  টেরাকোটা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।  রাঢ় অঞ্চলে স্থানীয় লৌকিক দেবতা ধর্মঠাকুরের পূজায় টেরাকোটা ও কাঠের ঘোড়া ব্যবহৃত হয়। অনেক গ্রামে বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে গ্রামবাসীরা ঘোড়া মা...

আমার ছড়া

      ।। সধবার একাদশী ।।                                    কাবলিওয়ালার ব‌উ দেখিনি পাঞ্জাবীদের টাক দেখিনি বোরখা পরে তোলা সেলফি দেখিনি নাঙ্গা বাবার  কাপড়জামা দেখিনি। গুজরাটেতে মদ চলেনা অরুনাচলে মদের নিষেধ চলেনা নৈনীতালে ফ‍্যান চলেনা লে লাদাকে রেল চলেনা। আইসক্রীমে বরফ নেই শ‍্যাওড়া গাছে পেত্নী নেই কৃষ্ণনগরে কৃষ্ণ নেই আজ লাইফ আছে জীবন নেই।                      ।। রসগোল্লা ।।                             পান্তোয়া সন্দেশ যতকিছু আনোনা বাংলার রসগোল্লা তার নেই তুলনা। নানাভাবে তোলপাড় কতকিছু ঝামেলা নবীনের নব আবিষ্কার নাম রসগোল্লা। আসল ছানার গোল্লা সে...

অপরাজিতা

অপরাজিতা বহু বৈচিত্রে ভরা অপরাজিতা।  দেবী দূর্গার বিভিন্ন রুপের মধ‍্যে আরও একটি রুপ হল  অপরাজিতা। অপরাজিতা কথার অর্থ অপরাজেয় অর্থাৎ যাকে কেউ পরাজিত করতে পারেনা।   মহর্ষি বেদব‍্যাসের বর্ণনা অনুযায়ী অপরাজিতা দেবীকে আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ শক্তিদায়িনী রুপে মান‍্যতা দেওয়া হয়েছে। ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য দেবতারা নিয়মিত আরাধনা করেন। বিজয়া দশমী বা দশেহরার সময় শক্তির রুপীনির আর এক প্রতীক হিসেবে কল্পনা করে পুজো করা হয়ে থাকে যাতে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে যেন জয়ী হ‌ওয়া যায়। অপরাজিতা পুজোর পর সেই লতা হাতে ধারণ করার রীতি অনেক স্থানেই চালু আছে। মানুষের বিশ্বাস এই অপরিজিতা রুপে দেবী দূর্গা সমস্ত অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে ধর্মের পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করে। দেবী পূরাণে ও শ্রী শ্রী চন্ডীতে এরকম কাহিনী বর্ণীত হয়েছে।             ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে এই ফুলের আবিষ্কার যার ব‍্যাপ্তি সুদূর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা পর্যন্ত। ভারতের মোটামুটি সব স্থান ছাড়াও বিদেশে যেমন ইজিপ্ট, সিরিয়া, মেসো...