Skip to main content

ভাঙ্গাহেড়ের দাদু


ভাঙ্গাহেড়ের দাদু
জৈষ্ঠ মাসের শেষের দিক প্রচন্ড দাবদাহে সারা বাংলা যেন জ্বলছে । সকাল  দশটা এগারোটার পর আর বেরোনো যাচ্ছেনা , যাবতীয় কাজকর্ম যতটা সম্ভব তার আগেই সেরে ফেলতে হচ্ছে। বৃষ্টির নামগন্ধ নেই জানিনা এই পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে। ঘরের বাইরে যেমন কষ্ট ভেতরেও সেই একই অবস্থাখবরের কাগজে খবর পাই পৃথিবী নাকি দিনদিন গরম হয়ে যাচ্ছে । আজকাল কালবৈশাখীও খুব একটা হয়না , দুএকটা কালবৈশাখী হয়ে গেলে কিছুটা অন্তত স্বস্তি পাই। ‘ চৈত্রের চিতাভষ্ম উড়ায়ে উড়াইয়া জ্বালা পৃথ্বীর.... ‘ কবির মর্মস্পর্শী লেখা এখন শুধু বইএর পাতায় । প্রকৃতি এসব আর দেখেনা। সুকুমার রায়ের “ অবাক জলপানের “ শুরুর কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে ‘ না একটু জল না পেলে আর চলছেনা , এখনও প্রায় একঘন্টার পথ বাকি......কিন্তু জল চাই কার কাছে ? গেরস্তের বাড়ি দুপুর রোদে দরজা এঁটে ঘুম দিচ্ছে ..... পথেও তো কোনো লোকজন দেখছিনে
দুপুরে ভাতটা খেয়ে বডিটা একটু এলিয়ে এইসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন চোখ লেগে এসেছে বুঝতেই পারিনি। কলিং বেলের শব্দ শুনে আলপনা দরজা খুলে  গ্রীষ্মের এই ভরুদুপুরে এক অচেনা বৃদ্ধকে দেখে আশ্চর্য্য হয়ে প্রশ্ন করে ‘বলুন, কাকে চাই।‘ কিছুটা হাঁপাতে হাঁপাতে ৬৫ -৭০ বছরের বৃদ্ধ জবাব দেয়
‘আমায় চিনবেনা আমি ভাঙ্গাহেড় থেকে আসছি , তুমি অবিনাশের মেয়েতো! আমি নিতাই অবিনাশের সম্পর্কে কাকা জামাই বাবাজী আছেতো!’
‘আছে , একটু অপেক্ষা করুন ডাকছি।’
তারপর আমার কাছে এসে ‘ওগো শুনছো, কে এসেছে বলছে ভাঙ্গাহেড় থেকে এসেছে ‘।
ঘুমটা বেশ জমে এসেছিলো , আলপনা ঠিক কি বলছে বুঝতে না পেরে চোখ বন্ধ করেই বললাম
‘ভাঙ্গা হয়ে গেছে , তাহলে টাকা নিয়ে চলে যেতে বলো’ ।
‘আরে না না বলছে, কি আবোল তাবোল বকছো।  ভাঙ্গাহেড় থেকে একজন এসেছে ‘।
অ্যাঁ ,ভাঙ্গাহেড় ! সেতো তোমারই বাপের বাড়ির গ্রামের লোক , আবার ! ঠিক আছে যাও ডাকো।‘
‘আবার’  বলাটার মধ্যে যথেষ্ট আতঙ্ক আছে তাই একটু থতমত খেয়ে দরজা খুলে ‘আসুন ভেতরে আসুন’ বলে ডেকে আনলো। আগন্তুক তখন কাউকে বলছে ‘বস্তা দুটো একটু নামিয়ে দে বাবা’।
এক রিক্সাওয়ালা মাঝারি সাইজের দুটো ভর্তি বস্তা ভেতর অব্দি পৌঁছে ওনার কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে গেলো।

            সাত আট মাস আগে হঠাৎই মাঝবয়েসী এক ভদ্রলোক একটা মিষ্টির বাক্স নিয়ে কলিং বেল বাজায়। দরজা খুলে দেখি সম্পূর্ণ অপরিচিত এক মুখ ।
            ‘আমি ভাঙ্গাহেড় থেকে আসছি , সত্যরঞ্জন।‘
            ‘ভাঙ্গাহেড় , সেটাকি। নামটার সঙ্গে একদমই পরিচিত ছিলামনা। আমার গিন্নী আলপনার এ ব্যাপারে খুব খ্যাতি , এধার ওধার অনেক কিছু মনে রাখতে পারে।ওকেই ভরসা করে জিজ্ঞেস করি
‘কিগো ভাঙ্গাহেড়, সত্যরঞ্জন....চেনো নাকি?‘
দুতিন মিনিট একটু চিন্তা করে আলপনার উত্তর ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ ভাঙ্গাহেড়, সেতো আমার বাবাদের দেশের বাড়ি। বাবার কাছে শুনেছি ।বাড়ি ঘর না থাকলেও জমি জায়গা কিছু এখনো আছে। বাবাকে কোনোদিন যেতে দেখিনিবাবা বলেছিলো এখান থেকে ৩০-৩৫ কিলোমিটার দুরে হবে।ব্যাস এই পর্যন্তই, তবে সত্যরঞ্জন বলে কাউকে তো চিনিনা।‘
ভরসা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সত্যরঞ্জন বলে ‘তুমি অবিনাশের মেয়েতো! , অবিনাশের আমি জেঠতুতো দাদা। কিকরে চিনবে বলো আজকাল তো  আত্মীয়ের বাড়ি যাতায়াত বন্ধই হয়ে গেছে। অবিনাশ ভালো আছেতো!’ এই বলে মিষ্টির বাক্সটা হাতে গুঁজে দিয়ে সোফায় বসতে বসতে বলতে লাগলো
‘এই বুঝি আমাদের জামাই বাবাজী।খাসা জামাই হয়েছে, হবে নাইবা কেনো অবিনাশের নজরই আলাদা!’
শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় বলে কথা যথা সম্ভব খাতির করে চা জলখাবার দিয়ে আপ্যায়ন পর্ব শেষ করার পর প্রশ্ন করি
            ‘বলুন কিছু বলবেন?’
সঙ্গে সঙ্গে চোখ মুখ ছলছল করে উঠলো। ধুতির কোণে চোখ মুছতে মুছতে বলতে থাকে
            ‘কি বলবো বাবা কন্যাদায়। আমাদের তো গ্রামের ব্যাপার ছেলেমেয়ে যতই পড়াশোনা করুক দেনা পাওনা  সবই আছে তাছাড়া আরও অন্যান্য খরচ।মোটামুটি সব ব্যবস্থাই করে ফেলেছি শুধু ঐ আশীর্বাদের ঘড়িটা, এ দায়টা  তোমাদেরই নিতে হবে।‘
            খুড় শ্বশুরের মেয়ের বিয়ে বলে কথা, শালিকা, ঘরের ভেতরে স্বামী স্ত্রী দুজনায় একপ্রস্থ গভীর আলোচনা করে আমতা আমতা করে বলি , ‘দেখুন আপনার পরিস্থিতি আমরা বুঝতে পারছি তবে কি ঘড়ি কিনবো, পছন্দ হবে কিনা তাই.....’ , আমার মুখের কথা একদম কেড়ে নিয়ে বললো ‘হ্যাঁ বাবাজীবন ঠিকই ভেবেছো আমিই কিনে নেবো, তুমি হাজার খানেক দাও তাহলেই হবে বাকিটা আমি ম্যানেজ করে নেবো।‘
            আলপনাকে ইশারা করতেই আলমারী থেকে এক হাজার টাকা বের করে সত্যরঞ্জনের হাতে গুঁজে দিলো। আর দেরি না করে প্রায় সাথে সাথে বেরোনর জন্যে উঠে দাঁড়াল ‘এবার তাহলে আসি অনেকটা পথ যেতে হবে। কন্যাদায় বলে কথা, করতেই হবে‘ যাবার আগে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘ আর এক দিন এসে কার্ড দিয়ে যাবো মামনি আর বাবাজী তোমাদের যেতেই হবে।‘  কোনক্রমে মাথা নেড়ে বিদায় দিলাম।
            ‘কার মুখ দেখে উঠেছিলাম কে জানে সকাল সকাল হাজার টাকা গচ্ছা গেলো
গিন্নীর আমার দয়ার শরীর, আমি বলি দয়ানন্দ সরস্বতী, বলে উঠলো ‘ আহা অমন করে বোলোনা , কন্যাদায় বলে কথা।‘ ‘অগত্যা’ বলে নিজেকে শান্তনা দিয়ে সত্যরঞ্জন পর্ব এখানেই শেষ করলাম।

            ‘একটু জল দেবে, যা রোদ গলা শুকিয়ে গেছে বড্ড হাঁপিয়ে গেছি
বৃদ্ধ নিতাই এর কথায় যেন সম্বিত ফিরে পেলাম। কি সব ভাবতে ভাবতে ওনাকে বসতে পর্যন্ত্য বলিনি। ‘ওহো আপনি বসুন , ওনাকে একটু ঠান্ডা জল দাও। ফ্রীজের জল দেবে?’
            ‘না না ওসব সহ্য হবেনা এমনি জল হলেই হবে।‘
যাইহোক গৃহস্ত বাড়ি, এই অবেলায় শুধু কি জল দিলে চলে। সঙ্গে দুটো মিষ্টি আর জল দিয় বলে ‘এটুকু মুখে দিন
মিষ্ট ওজল খেয়ে একটু ধাতস্থ হয়ে আলপনাকে বলতে শুরু করলেন
‘ ভাঙ্গাহেড়, মানে বাপের বাড়ির সম্পর্কে আমি তোমাদের দাদু হই। অবিনাশ আমার ভাইপো হয় মানে...’
‘না মানে ঠিক চিনিনা, কোনদিন তো যাইনি।‘ আলপনাই ওনাকে থামিয়ে বলে।
‘তাতো বটেই, অবিনাশই কতদিন যায়নি। আগে ধানবাদে থাকতে তাও মাঝে মধ্যে আসতো, সেও অনেক বছর হবে। বাইরে থাকে বুঝতে পারি। তবে দেখা সাক্ষাত হলে ভালো লাগে।‘
‘সেতো বটেই, নানা কাজে ব্যস্ত ছুটিও পায়না’
‘কিছুদিন আগে খবর পেলাম তোমরা এখানে থাকো, যেভাবেই হোক তোমাদের ঠিকানা পেয়েছি।‘
‘আপনি তো ভাঙ্গাহেড়েতে থাকেন, সত্যরঞ্জনকে চেনেন?’ ফেলুদার মতো মোক্ষম একটা প্রশ্ন ছুঁড়েছি।
‘সত্যরঞ্জন , চিনবোনা মানে! একই গ্রমে থাকি নিশ্চয় চিনি তোমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ হয়েছে নাকি ঐ ফেরেব্বাজটার
‘ফেরেব্বাজ ’ আমরা দুজনায় একসাথে বলে উঠলাম।
‘তাতো বলাই যায়, তবে ওকে নিয়ে কেনো পড়লে তোমরা, কোন গোলমাল হয়েছে বুঝি।‘
‘না মানে গোলমাল ঠিক নয় তবে আপনার কথা শুনে কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছে।‘ তারপর সেই সত্যরঞ্জনের সমস্ত ঘটনাটা বলতেই আমাকে থামিয়ে দিলো ।
‘মেয়ের বিয়ে, কন্যাদায় !ঠিক ধরেছি এখানে এসে কোনো একটা ফেরেব্বাজি করে গেছে। ওর আবার মেয়ের বিয়ে কি, ওর কাজই হলো এই ভাবেই লোক ঠকানো । শুধু আমদের গ্রাম কেনো আশেপাশের গ্রামেও ওকে ঐ বলেই চেনে। ঐ নিয়েই যতো অশান্তি, বৌটা বছর পাঁচেক হলো গলায় দড়ি দিয়েছে। দুটো ছেলে কেউ সম্বন্ধ রাখেনা। শুনেছি ওরা এখন কোলকাতায় কিছু একটা করে।‘
‘বলছেন কি আপনি, একটুও বুঝতে পারলামনা। যাকগে অল্পের ওপর গেছে।‘
‘না না বেশি অল্পের কথা নয়, কুটুম বাড়ি বলে কথা। ছিঃ ছিঃ চরম লজ্জার কথা।‘

আমরা স্বামী স্ত্রী দুজনায় কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম। নিতাই দাদুই নিরবতা ভঙ্গ করলেন
            ‘অবিনাশের ভাগের জমি জায়গা,  গাছ , পুকুর বেশ খানিকটাই আছে।তোমাদের বাবাই আমাদের অভাব দেখে সেগুলো ভোগ করতে বলেছিলো। লেখাপড়া কিছু নেই সবই মৌখিক। সেই থেকেই আমি আর আমার সংসার সব কিছু ভোগ করছি। যেদিন তোমাদের খোঁজ পেয়েছি একবার দেখা করে কৃতজ্ঞতা জানাতে না পারলে মনটা কেমন যেন খচখচ করছিলো। তা অবিনাশ এখন আছে কেমন? ‘
আলপনাই জবাব দেয় ‘ভালোই আছে , এখন কোলকাতায় থাকে।‘
            ‘ একবার দেখা করতে বলো, বয়েস হয়েছে কবে আছি কবে নাই....। কিছু মনে কোরোনা বাবাজীবন এই একটু চাষের ধানের ঢেঁকিছাঁটা চাল আর কিছু পাকা আম তোমাদের জন্যে নিয়ে এসেছি । এগুলো তুলে রাখো। আমি জানি এসব তোমাদের কাছে কিছুই নয়। তবুও নিজের দেশের চাল আর গাছপাকা আম এর স্বাদই আলাদা।‘
            ‘ আপনি শুধু এইগুলো দেবার জন্য এই কাঠফাটা রোদে এতদুর এসেছেন?’ অবাক ভাবে আলপনা শুধোয়।
            ‘ কি আর করি,কষ্ট হলেও এই যে নিজের হাতে তোমাদের কাছে তুলে দিতে পেরেছি তার কি কম আনন্দকিছুটা দায়মুক্তও হলাম। এবার আমি উঠি।‘
            ‘ আর একটু বেলা পরুক, তাপটা কমলে যাবেন। একটু চা করি দাদু।‘
            ‘ নাগো কোন অসুবিধে হবেনা বরং দেরি করলে ওদিকের গাড়ি পাবনা বুড়ো মানুষ বিপদে পড়ে যাবো‘ এই বলে নিতাই দাদু বেরিয়ে গেলেন। বিহ্বল দৃষ্টিতে বাকরুদ্ধ হয়ে আমরা বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর দরজা বন্ধ করে ঘরে ঢুকলাম।

            বেশ কিছুদিন ভাঙ্গাহেড়ের নিতাই দাদুর কথা মনে থাকলেও আস্তে আস্তে বিস্মৃত হয়ে গেছিলাম। কোনো বিশেষ ঘটনা ছাড়াই মোটামুটি দিন কাটছিলো। সেপ্টেম্বারের শেষে দিক হিসেব মতো বর্ষাকাল চলে গেলেও মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি পড়ে। এই রকম এক বিকেলে একটু আগেই ঝমঝম করে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে , এখনও টিপটিপ করে পড়ছে। আমরা দুজনায় ব্যালকানিতে বসে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে চা খাচ্ছি। হঠাৎ ছাতা মাথায় একজনকে আসতে দেখে নজর দিতেই দেখি সেই সত্যরঞ্জন। আবার একঝুড়ি মিথ্যা নিয়ে আমাদের দরজায় বেল বাজাচ্ছে। মনে মনে ঠিক করলাম আজ আর বোকা বানাতে পারবেনা উচিৎ জবাব দেবো। ধীরেসুস্থে দরজা খুলতেই সত্যরঞ্জন ঢুকে এলো ‘কি বাবাজীবন সব ভালোতো , ‘কাছাকাছিই এসেছিলাম তাই দেখা করতে এলাম। ‘
            ‘বসুন’ আলপনার অনুরোধে ভেজা ছাতা গোটাতে গোটাতে বসে পড়লো।
            ‘আপনার মেয়ের বিয়ের কি হলো , এতদিন পেরিয়ে গেলো..’
            ‘সে খবর দিতেই তো আাসা। বিয়ের সব কিছুই ব্যবস্থা হয়ে গেছে নিমন্ত্রণ কার্ড বিলি চলছে , তোমাদের কার্ডেও নাম লেখা আছে হঠাৎই আমাদের এক কাকা বয়েস হয়েছিলো মারা গেলো তবে  যাবার মতো নয় , অসুখ বিসুখও কিছু ছিলনা
‘কোন কাকা’
‘তোমরা চিনবেনা’ আলপনার উদ্দেশে বলে ‘নাম শুনে থাকবে হয়তো , নিতাই, অবিনাশের জমি জায়গা সব সেইতো ভোগ করে কি করি বিয়ে আটকে গেল, জ্ঞাতি বলে কথা কালাশৌচ। গ্রামে গঞ্জে এখনো এসব চালু আছে।‘
‘কি  করে মারা গেলো!’
‘ ঠিক জানিনা  কোনো এক আত্মীয়ের বাড়ি দেখা করত গেছিলো , প্রচন্ড গরমের সময়। রোদ লেগে গেছিলো ,বুড়ো মানুষ সহ্য করতে পারেনি। ফিরে গিয়েই জ্বর বমি,  দিনসাতেক যমে মানুষে টানাটানি। অনেক চেষ্টা করেও কিছু হলোনা মারা গেলেন।‘

নির্লজ্জের  মতো চুপ করে সব শুনলাম আর নিজেদের অপরাধী ভেবে বিবেক দংশনে ভুগতে থাকলম। আমি একটু সাহসী হয়েই জিজ্ঞেস করি
‘সত্যিই আপনার মেয়ের বিয়ে তো?’
‘এ কি বলছো তোমরা , আমার মেয়ে ছাড়া আর কার জন্যে ভিক্ষে চাইতে আসবো বাবাজী।‘
‘আর আপনার স্ত্রী, সে কোথায়?’
‘সে আর কোথায় যাবে, গ্রামের মেয়েতো কোথাও বেরোয় না। তবে তোমাদের কথা ওকে আমি বলেছি। নিজেই বলছিলো এক দিন দেখা হলে ভালো হতো। কিন্তু এরকম কেনো বলছো তোমরা।’
 ‘না এমনি বললাম, কিছু মনে করবেননা।‘ মাথার ভেতরটা কেমন জট পাকিয়ে গেলো।
এরই মাঝে সত্যরঞ্জন যাবার জন্যে তৈরী হচ্ছে ‘তাহলে আমি আসি, পরে সব জানাবো।‘

            সত্যরঞ্জন চলে গেলো কিন্তু এক বিরাট ধাঁধার মধ্যে রেখে গেলো। সত্যরঞ্জন জেঠু না নিতাই দাদু !

Comments

Popular posts from this blog

বাঁকুড়ার টেরাকোটা

                                                                বাঁকুড়ার টেরাকোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের শিল্পকর্মের এক বিশেষ স্থান   অধিকার করে আছে।  বাঁকুড়ার  পোড়ামাটির  ঘোড়া ও হাতি নির্মাণের  প্রধান শিল্প  কেন্দ্র গুলি   হল পাঁচমুড়া,  রাজাগ্রাম, সোনামুখী ও হামিরপুর।  প্রত্যেক শিল্পকেন্দ্রের নিজস্ব স্থানীয় ধাঁচ ও  শৈলী রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচমুড়ার  ঘোড়াগুলিকে চারটি ধাঁচের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম  বলে মনে করা হয়। বাঁকুড়ার ঘোড়া এক  ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। ঘোড়া ছাড়াও বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী উট , হাতি , গনেশ ,  নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত মূর্তি তৈরী করে  টেরাকোটা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।  রাঢ় অঞ্চলে স্থানীয় লৌকিক দেবতা ধর্মঠাকুরের পূজায় টেরাকোটা ও কাঠের ঘোড়া ব্যবহৃত হয়। অনেক গ্রামে বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে গ্রামবাসীরা ঘোড়া মা...

আমার ছড়া

      ।। সধবার একাদশী ।।                                    কাবলিওয়ালার ব‌উ দেখিনি পাঞ্জাবীদের টাক দেখিনি বোরখা পরে তোলা সেলফি দেখিনি নাঙ্গা বাবার  কাপড়জামা দেখিনি। গুজরাটেতে মদ চলেনা অরুনাচলে মদের নিষেধ চলেনা নৈনীতালে ফ‍্যান চলেনা লে লাদাকে রেল চলেনা। আইসক্রীমে বরফ নেই শ‍্যাওড়া গাছে পেত্নী নেই কৃষ্ণনগরে কৃষ্ণ নেই আজ লাইফ আছে জীবন নেই।                      ।। রসগোল্লা ।।                             পান্তোয়া সন্দেশ যতকিছু আনোনা বাংলার রসগোল্লা তার নেই তুলনা। নানাভাবে তোলপাড় কতকিছু ঝামেলা নবীনের নব আবিষ্কার নাম রসগোল্লা। আসল ছানার গোল্লা সে...

অপরাজিতা

অপরাজিতা বহু বৈচিত্রে ভরা অপরাজিতা।  দেবী দূর্গার বিভিন্ন রুপের মধ‍্যে আরও একটি রুপ হল  অপরাজিতা। অপরাজিতা কথার অর্থ অপরাজেয় অর্থাৎ যাকে কেউ পরাজিত করতে পারেনা।   মহর্ষি বেদব‍্যাসের বর্ণনা অনুযায়ী অপরাজিতা দেবীকে আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ শক্তিদায়িনী রুপে মান‍্যতা দেওয়া হয়েছে। ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য দেবতারা নিয়মিত আরাধনা করেন। বিজয়া দশমী বা দশেহরার সময় শক্তির রুপীনির আর এক প্রতীক হিসেবে কল্পনা করে পুজো করা হয়ে থাকে যাতে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে যেন জয়ী হ‌ওয়া যায়। অপরাজিতা পুজোর পর সেই লতা হাতে ধারণ করার রীতি অনেক স্থানেই চালু আছে। মানুষের বিশ্বাস এই অপরিজিতা রুপে দেবী দূর্গা সমস্ত অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে ধর্মের পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করে। দেবী পূরাণে ও শ্রী শ্রী চন্ডীতে এরকম কাহিনী বর্ণীত হয়েছে।             ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে এই ফুলের আবিষ্কার যার ব‍্যাপ্তি সুদূর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা পর্যন্ত। ভারতের মোটামুটি সব স্থান ছাড়াও বিদেশে যেমন ইজিপ্ট, সিরিয়া, মেসো...