Skip to main content

জেনরেশন গ‍্যাপ (Generation Gap)

জেনরেশন গ‍্যাপ (Generation Gap)

টিভিতে দাদাগিরি দেখছিলাম পাশেই ছিল আমাদের নাতনি রুমকি।টিভির এইসব কুইজ প্রোগ্রাম গুলো থেকে আজকাল ছোটবড়, মাঝবয়সী বুড়ো বুড়ি সবারই জ্ঞানের ভান্ডার বেড়ে চলেছে। অনেক প্রশ্ন‌ই টিভির এধার থেকে টপাটপ বলে দিতে পারি। কোনোটা  ঠিক হয় আবার কোনোটা ভুল হয়ে গেলে সরি সরি বল ম্যানেজ করতে হয়।
এই টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎই রুমকির মোবাইল ফোনটা একবার টুং করেই থেমে গেল।
        কিরে ধরলিনা, ফোনটা কেটে গেল তো।
        রুমকির উত্তর , কেউ ফোন করে নি ওটা পিং।
        মানে?
        আরে বাবা মেসেজ এর নোটিফিকেশন তুমি বুঝবেনা।
        তা নোটিফিকেশন যখন দেখতে তো হবে।   
ঊফ্ বলে বিরক্তি প্রকাশ করে মোবাইল চালু করে দেখল, একটা কিছু দেখে লিখে দিল v nc.
        ওটা আবার কি লিখলি v nc এর মানে কি
        তোমায় বললাম তো দাদু তুমি বুঝবেনা। V nc মানে হলো very nice.
         অ্যাঁ বলিস কিরে! V nc মানে হলো very nice. বাপের জন্মেও এরকম শুনিনি বাপু।
মনে মনে ভাবলাম ছেলেবেলায় ইংরেজি নিয়ে আমরাও মজা করতাম যেমন p u t পুট ,  তাহলে b u t বাট কেন হবে। আবার psychology র আগে p কেন , বানান যাতে ভুল না হয় তাই বাংলায় বলতাম পিসিচলোযাই। এই রকম আরও ছিলো যেমন Djakarta উচ্চারণ করতে হতো Jakarta বলে, ১৯৭২ সালের পরে অবশ্য D টা উঠিয়েই দিয়েছে। এই রকম আরও কতো কি।
          তবে এখনকার ইংরেজি ! আর কি কি আছে একটু বলবি।
     ক্লাস এইটে পড়া নাতনী তাচ্ছিল্য স্বরে বলে উঠলো, বেকার তোমায় শোনানো,  মনেই রাখতে পারবেনা।
          তবুও..
          তাহলে বলতো gm, gn, thx, xlnt এগুলোর মানে কি?
অনেক্ষণ ভেবে বললাম thx মানে কি thanks ?
          রাইট ! বাকিগুলো বলো। জানি পারবেনা। gm মানে good morning, gn মানে good night, xlnt মানে Excellent. আরও আছে যেমন Rd, msg, omg, u, sd, gd sht, lvl, mi, k আর বলবো?
          দাঁড়া, দাঁড়া আগে এগুলোর মানে বুঝি।
রুমকি একএক করে শুরু করলো read, massage, oh my god, you, sweet dream, good shot, lovely, aami, OK.
          এই কি abbreviations.
          ওসব abbreviations বলে কিছু বুঝি না।
         তবুও you থেকে u, OK থেকে আরও সর্ট করে শুধু K.
         আচ্ছা বলোতো a6e ,6ob, এগুলো মানে কি?
অপেক্ষা না করে নিজেই বলে দিলো, a6e হলো আছে, 6ob হলো ছবি।
        এগুলো শিখলি কি ক‍রে?
        শেখাতে হয়না, কিছু দিন ফেসবুক আর হোয়াট্স অ্যাপ ফলো করলেই বোঝা যায়।
         তা এগুলো কি ডিক্সনারীতেও পাওয়া যাবে।
         হয়তো পাওয়া যাবে, নাহলেও কিছু দিনের মধ্যে এসে যাবে।
         তা দাদুভাই এই হলো তোমাদের জেনারেশন। ইংলিশ গুলোর না আছে কোনো মানে, না আছে কোনো গ্ৰামার।
         ইংলিশ টার এই হাল করে ছাড়লি। আমাদের সময় ছিল নেসফিল্ড, পিকে দে সরকারের গ্ৰামার। তার বাইরে এক চুল নড়বাড় সাহস ছিলোনা। তা স্কুলের ব‌ইয়েও কি এসব ইংলিশ চলে।
          ঐযে বল্লাম এখনো চালু হয়নি তবে হয়ে যাবে একদিন।
           আর বেশি কথা বাড়ালাম না। তার‍ই ফাঁকে টিভিতে দেখি দাদাগিরি শেষ হয়ে গেল। খানিকক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে থেকে টের পেলাম আসল দাদাগিরি কি!

Comments

Popular posts from this blog

বাঁকুড়ার টেরাকোটা

                                                                বাঁকুড়ার টেরাকোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের শিল্পকর্মের এক বিশেষ স্থান   অধিকার করে আছে।  বাঁকুড়ার  পোড়ামাটির  ঘোড়া ও হাতি নির্মাণের  প্রধান শিল্প  কেন্দ্র গুলি   হল পাঁচমুড়া,  রাজাগ্রাম, সোনামুখী ও হামিরপুর।  প্রত্যেক শিল্পকেন্দ্রের নিজস্ব স্থানীয় ধাঁচ ও  শৈলী রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচমুড়ার  ঘোড়াগুলিকে চারটি ধাঁচের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম  বলে মনে করা হয়। বাঁকুড়ার ঘোড়া এক  ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। ঘোড়া ছাড়াও বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী উট , হাতি , গনেশ ,  নানা ভঙ্গিমায় নৃত্যরত মূর্তি তৈরী করে  টেরাকোটা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।  রাঢ় অঞ্চলে স্থানীয় লৌকিক দেবতা ধর্মঠাকুরের পূজায় টেরাকোটা ও কাঠের ঘোড়া ব্যবহৃত হয়। অনেক গ্রামে বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে গ্রামবাসীরা ঘোড়া মা...

আমার ছড়া

      ।। সধবার একাদশী ।।                                    কাবলিওয়ালার ব‌উ দেখিনি পাঞ্জাবীদের টাক দেখিনি বোরখা পরে তোলা সেলফি দেখিনি নাঙ্গা বাবার  কাপড়জামা দেখিনি। গুজরাটেতে মদ চলেনা অরুনাচলে মদের নিষেধ চলেনা নৈনীতালে ফ‍্যান চলেনা লে লাদাকে রেল চলেনা। আইসক্রীমে বরফ নেই শ‍্যাওড়া গাছে পেত্নী নেই কৃষ্ণনগরে কৃষ্ণ নেই আজ লাইফ আছে জীবন নেই।                      ।। রসগোল্লা ।।                             পান্তোয়া সন্দেশ যতকিছু আনোনা বাংলার রসগোল্লা তার নেই তুলনা। নানাভাবে তোলপাড় কতকিছু ঝামেলা নবীনের নব আবিষ্কার নাম রসগোল্লা। আসল ছানার গোল্লা সে...

অপরাজিতা

অপরাজিতা বহু বৈচিত্রে ভরা অপরাজিতা।  দেবী দূর্গার বিভিন্ন রুপের মধ‍্যে আরও একটি রুপ হল  অপরাজিতা। অপরাজিতা কথার অর্থ অপরাজেয় অর্থাৎ যাকে কেউ পরাজিত করতে পারেনা।   মহর্ষি বেদব‍্যাসের বর্ণনা অনুযায়ী অপরাজিতা দেবীকে আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ শক্তিদায়িনী রুপে মান‍্যতা দেওয়া হয়েছে। ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য দেবতারা নিয়মিত আরাধনা করেন। বিজয়া দশমী বা দশেহরার সময় শক্তির রুপীনির আর এক প্রতীক হিসেবে কল্পনা করে পুজো করা হয়ে থাকে যাতে জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে যেন জয়ী হ‌ওয়া যায়। অপরাজিতা পুজোর পর সেই লতা হাতে ধারণ করার রীতি অনেক স্থানেই চালু আছে। মানুষের বিশ্বাস এই অপরিজিতা রুপে দেবী দূর্গা সমস্ত অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে ধর্মের পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করে। দেবী পূরাণে ও শ্রী শ্রী চন্ডীতে এরকম কাহিনী বর্ণীত হয়েছে।             ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে এই ফুলের আবিষ্কার যার ব‍্যাপ্তি সুদূর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা পর্যন্ত। ভারতের মোটামুটি সব স্থান ছাড়াও বিদেশে যেমন ইজিপ্ট, সিরিয়া, মেসো...