আসানসোল থেকে দিসেরগড় ব্রীজ দিয়ে মাত্র ৩৫ কিমি দুরে পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত পর্যটন কেন্দ্র গড়পঞ্চকুট।ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থান এক দিনের ও রাত্রের পক্ষে আদর্শ।
ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য অনুসারে সন ১৭৪০ থেকে ১৭৫১,প্রায় দশবছর ধরে নাগপুরের শাষনকর্তা রাঘোজী ভোঁসলের নেতৃত্বে বাংলায় বর্গীহানার মাধ্যমে লুঠতরাজ চালিয়ে যায়। এইসময় গড়পঞ্চকুট আক্রমন হয় ও লুঠতরাজের পর ধংসপ্রাপ্ত হয়।
গড় পঞ্চকোট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় পঞ্চকোট পাহাড়ের কোলে অবস্থিত একটি প্রত্নস্থল। এই স্থানটি ঐ অঞ্চল শাসনকারী শিখর রাজবংশের রাজধানী ছিল ও প্রায় পাঁচ মাইল বিস্তিৃত একটি দুর্গ ছিল। গড় পঞ্চকোটের অধিকাংশ স্থাপত্য বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত বা অবলুপ্তির পথে। এই স্থানে বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যেগুলি উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গড় পঞ্চকোটের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য মন্দির হল একটি পঞ্চরত্ন টেরাকোটা নির্মিত দক্ষিণ ও পূর্বদুয়ারী রাস মন্দির। মন্দিরের গায়ে ফুল ও আলপনার নকশা ছাড়াও খোল, করতাল বাদনরত ও নৃত্যরত মানব-মানবীর মূর্তি পরিলক্ষিত হয়। ষাট ফুট উচ্চ কেন্দ্রীয় চূড়া বিশিষ্ট ভগ্নপ্রায় এই মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই। উত্তরপশ্চিম দিকে অপর একটি পঞ্চরত্ন টেরাকোটা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, বর্তমানে যার চারটি চূড়া নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ও মধ্যের ৪০ ফুট উচ্চ চূড়াটি অবশিষ্ট রয়েছে।
গড়ের পশ্চিমদিকে প্রস্তর নির্মিত কঙ্কালী মাতার ভগ্নপ্রায় মন্দিরের অস্তিত্ব বর্তমান। মন্দিরের সামনের অংশ অক্ষত হলেও পেছনের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত। কঙ্কালী মাতা পঞ্চকোট রাজ্যের কুলদেবী হলেও বর্তমানে এই মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই। মন্দিরের প্রবেশপথের ওপরে কোন লিপি বা মূর্তি খোদিত ছিল, যা বর্তমানে বিনষ্ট হয়েছেI
গড়ের বাম দিকে প্রস্তর নির্মিত কল্যাণীশ্বরী দেবী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বর্তমান। এছাড়াও দুইটি পায় ধ্বংসপ্রাপ্ত জোড়বাংলা মন্দির এই স্থানে অবস্থিত। এছাড়া পঞ্চকোট পাহাড়ের পাদদেশে রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ ও কর্মচারীদের বাসস্থান অবস্থিত।
গড় পঞ্চকোট কেন্দ্র করে পানচেৎ ও মাইথন ড্যাম ও তার প্রাকৃতিক দৃশ্যও দর্শকের আকর্শিত করে। মাইথনের বোটিং খুবই আনন্দদায়ক।
Comments
Post a Comment